ইংলিশ ছোবলে ৫৫ রানেই বিধ্বস্ত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা

ম্যাচটির আগে ঘুরে-ফিরে আসছিল পাঁচ বছর আগের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল। যেখানে শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের হাতের মুঠো থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু এবার সেই ইংলিশদের সামনে দাঁড়াতেই পারল না ক্যারিবিয়ানরা। গুটিয়ে গেল তারা বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বনিম্ন রানে। দারুণ জয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করল ইংলিশরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2021, 03:23 PM
Updated : 23 Oct 2021, 05:40 PM

দুবাইয়ে শনিবার সুপার টুয়েলভে দুই দলের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গুটিয়ে যায় কেবল ৫৫ রানে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আগে কখনও একশর নিচে অলআউট হয়নি তারা। সব দল মিলিয়ে এটি তৃতীয় সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর। এই রান করতেও অবশ্য ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড, বল বাকি ছিল যদিও ৭০টি।

দুর্দান্ত বোলিংয়ে ২ ওভার ২ বলে মাত্র ২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ইংলিশ লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে কম রান দিয়ে ৪ বা এর বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ডে স্টিভ টিকোলোকে স্পর্শ করেন তিনি। গড়েন ইংল্যান্ডের হয়ে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডও।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল ক্রিস গেইল (১৩ বলে ১৩)।   

উইকেটে বাউন্স ছিল অসমান। তবে একশর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার মতো কঠিন নয় মোটেও। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে মইন আলিকে ছক্কায় ওড়ান এভিন লুইস। তখনও কে জানত, কী দুঃস্বপ্নই না অপেক্ষা করছে টি-টোয়েন্টির দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সামনে!

দ্বিতীয় ওভারে ক্রিস ওকসকে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় মইনের দুর্দান্ত ক্যাচে বিদায় নেন লুইস। মইন পরের ওভারে এসে ফিরিয়ে দেন লেন্ডল সিমন্সকে। এই অফ স্পিনারের পরের ওভারে পরপর দুটি চার মারার পর সহজ ক্যাচ তুলে নেন শিমরন হেটমায়ার।

তিন বছর পর ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতে নামা টাইমাল মিলসের বলে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় গেইলের ৩ চারে ১৩ রানের ইনিংস।

এরপর ডোয়াইন ব্রাভো, নিকোলাস পুরানরা যোগ দেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। একাদশ ওভারে আক্রমণ এসে আদিল প্রথম বলেই বোল্ড করে দেন আন্দ্রে রাসেলকে।

নিজের পরের ওভারে টানা দুই বলে কাইরন পোলার্ড ও ওবেড ম্যাককয়কে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগান তিনি। সেটা না হলেও পরের ওভারে রবি রামপলকে বোল্ড করে গুটিয়ে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস।

ইনিংসের প্রথম সাত ওভারের মধ্যে টানা ৪ ওভারের স্পেলে মাত্র ১৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন মইন। এই অফ স্পিনার ডট বল খেলান ১৮টি। রশিদকে পেছনে ফেলে ম্যাচ সেরাও তিনিই।       

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় তিন ওভারে ২১ রান তোলেন দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় ও জস বাটলার। কিন্তু এরপর ১৮ রানের মধ্যে তারা হারায় ৪ উইকেট।

রামপলের বলে গেইলকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রয় (১১)। আকিল হোসেইনকে ফিরতি ক্যাচ দেন জনি বেয়ারস্টো ও লিয়াম লিভিংস্টোন। মাঝে রান আউটে কাটা পড়েন মইন। ২২ বলে ২৪ রানের ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন বাটলার।

বিশ্বকাপের মূল লড়াইয়ের নামার আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শিরোপা ধরে রাখার অভিযানটাও তাদের হলো খুব বিবর্ণ।     

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৪.২ ওভারে ৫৫ (সিমন্স ৩, লুইস ৬, গেইল ১৩, হেটমায়ার ৯, ব্রাভো ৫, পুরান ১, পোলার্ড ৬, রাসেল ০, আকিল ৬*, ম্যাককয় ০, রামপল ৩; মইন ৪-১-১৭-২, ওকস ২-০-১২-১, মিলস ৪-০-১৭-৩, জর্ডান ২-০-৭-১, রশিদ ২.২-০-২-৪)

ইংল্যান্ড: ৮.২ ওভারে ৫৬/৪ (রয় ১১, বাটলার ২৪, বেয়ারস্টো ৯, মইন ৩, লিভিংস্টোন ১, মর্গ্যান ৭*; আকিল ৪-০-২৪-২, রামপল ২-০-১৪-১, ম্যাককয় ২-০-১২-০, পোলার্ড ০.২-০-৬-০) 

ফল: ইংল্যান্ড ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মইন আলি।