হোম ওয়ার্কের জলাঞ্জলি, নতুন শুরুর দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ

টুর্নামেন্টের মাঝপথে আইসিসির সিদ্ধান্ত বদলের কারণে পাল্টে গেছে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম প্রতিপক্ষের নাম যখন জানলেন মাহমুদউল্লাহরা তখন ম্যাচ শুরু হতে বাকি ৪৮ ঘণ্টারও কম। আইসিসির 'খামখেয়ালিপনায়' জলাঞ্জলি দিতে হচ্ছে এত দিনের হোম ওয়ার্ক। ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ের ছক হয়ে গেছে অর্থহীন। এখন শ্রীলঙ্কাকে দিয়ে শুরু অভিযানে বাংলাদেশ কত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে, সেটাই দেখার।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতদুবাই থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Oct 2021, 06:03 PM
Updated : 23 Oct 2021, 09:03 AM

শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিয়মিত খেলে বাংলাদেশ। কদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ খেলায় তাসমান সাগর পাড়ের দেশটিও এখন অতটা অপরিচিত নয়। যদিও তাদের বিশ্বকাপ দলের অনেকেই অনুপস্থিত ছিল সেই সিরিজে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার সুযোগ মেলে মাঝেমধ্যে। কিন্তু ইংল্যান্ড? তারা তো বড্ড অচেনা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দেড় দশকেও তো তাদের বিপক্ষে মেলেনি কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ! এবারই প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ইংলিশদের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

দেশে থাকতে বাংলাদেশ জানত, সুপার টুয়েলভে গেলেই ভারত-পাকিস্তানের গ্রুপে পড়বে তারা। এশিয়ার দুই পরাশক্তির সঙ্গে আফগানিস্তান ও নিউ জিল্যান্ড, সঙ্গে প্রথম পর্ব পেরিয়ে আসা আরেকটি দল এবং সেটি কোনোভাবেই শ্রীলঙ্কা নয়। তাই সুপার টুয়েলভের আদলে হওয়া মূল বিশ্বকাপে এখন যারা প্রতিপক্ষ, তাদের নিয়ে আগে থেকে খুব একটা ভাবার কোনো কারণ নেই।     

খুব কম সময়ের মধ্যে ভিন্ন ধাঁচের একেকটি দলের বিপক্ষে কার্যকর পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের পথ বের করতে হবে বাংলাদেশকে। সিডিং পরিবর্তন হওয়ায় শুধু গ্রুপই পাল্টায়নি, সময়ও কমে গেছে রাসেল ডমিঙ্গো-মাহমুদউল্লাহদের। আগের হিসাবে ১৪ দিনে পাঁচ ম্যাচ খেলতে হতো বাংলাদেশের, এখন খেলতে হবে স্রেফ ১২ দিনে।

পেছনে পাঁচ দিনের মধ্যে তিন ম্যাচ খেলার ধকল। এরপরই আবার পাঁচটি টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে লড়াই। সব মিলিয়ে যোগ হয়েছে বাড়তি চ্যালেঞ্জ।

সেই ২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে মূল পর্বে কোনো ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর প্রতিবার তাদের ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে। ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙার প্রত্যয় জানিয়ে এবার খেলতে এসেছেন মাহমুদউল্লাহরা। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে একটা সময় আগেভাগেই বিদায় নেওয়ার শঙ্কা জাগলেও শেষ পর্যন্ত টানা দুই জয়ে টিকে যায় তারা। 

এবার আরেকটি লক্ষ্যও আছে বাংলাদেশের। সুপার টুয়েলভে ভালো করতে পারলে সুযোগ আছে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার।

ভারত, পাকিস্তান, নিউ জিল্যান্ড তিনটি দলই র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকায় এই দেশগুলোর বিপক্ষে একটি-দুটি জয় হতে পারত দারুণ সহায়ক। এখন গ্রুপে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা কেবল র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে। অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কা পিছিয়ে। তাদের বিপক্ষে হারে ভেস্তে যেতে পারে প্রাথমিক পর্ব এড়ানোর আশা।

নতুন গ্রুপে একটা সুবিধা অবশ্য পাচ্ছে বাংলাদেশ। শিশিরের প্রভাব নিয়ে ভাবতে হবে না মোটেও। সব ম্যাচই স্থানীয় সময় দুপুর দুইটায় শুরু হবে। তাই মূল পর্বে অনায়াসেই স্পিনে শক্তি বাড়ানোর কথা ভাবতে পারবে তারা। 

বাংলাদেশের পাঁচ ম্যাচের দুটি করে হবে শারজাহ ও আবু ধাবিতে। একটি হবে দুবাইয়ে। তবে এই শহরে থেকেই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেবে বাংলাদেশ। গ্রুপ বদলে গেলেও এই পরিকল্পনা থেকে সরছে না তারা।