পিএনজিকে হারিয়ে পরের ধাপের দুয়ারে স্কটল্যান্ড

সম্ভবত বিশ্বকাপের সবচেয়ে রঙচঙে জার্সি পাপুয়া নিউ গিনির। তাদের ক্যাপ তো দারুণ নান্দনিক। বিস্ময়করভাবে, মাঠে গুটিকয় দর্শকও পাওয়া গেল তাদের। ব্যান্ড-ঢোল বাজিয়ে, নাচে-গানে তারা মুখর করে রাখল চারপাশ। মাঠের ক্রিকেটে তাদের আনকোরা দল বেশির ভাগ সময় ধুঁকে শেষ দিকে উপহার দিল বিনোদন। তবে শেষ পর্যন্ত পারল না চমকপ্রদ কিছু করতে। বাংলাদেশকে হারানোর পর পাপুয়া নিউ গিনিকেও হারিয়ে স্কটল্যান্ড পৌঁছে গেল পরের ধাপের দুয়ারে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকমাসকাট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2021, 11:59 AM
Updated : 19 Oct 2021, 03:07 PM

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মঙ্গলবার ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে পাপুয়া নিউ গিনিকে ১৭ রানে হারায় স্কটল্যান্ড।

দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওমান জিতে গেলে তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমবারের মতো সুপার টুয়েলভ বা মূল পর্বে উঠে যাবে স্কটিশরা।

ওমানের ক্রিকেট একাডেমি মাঠে স্কটল্যান্ড ২০ ওভারে করে ৯ উইকটে ১৬৫ রান। পাপুয়া নিউ গিনি রান তাড়ায় শুরুতে ধুঁকে পরে নর্ম্যান ভানুয়ার সৌজন্যে শেষ পর্যন্ত করতে পারে ১৪৮ রান।

৪৯ বলে ৭০ রানের দুর্দান্ত ইানংস খেলে স্কটল্যান্ডের জয়ের ভিত গড়ে দেন অভিজ্ঞ রিচি বেরিংটন। পরে পেসার জশ ডেভি ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে নেন ১৮ রানে ৪ উইকেট।

ম্যাচের উইকেটে এ দিন ছিল বেশ ঘাস। টস জিতে তবু ব্যাটিংয়ে নামে স্কটল্যান্ড। শুরুতে দুটি উইকেট নিয়ে তাদের কিছুটা বিপাকে ফেলে দেয় পাপুয়া নিউ গিনি। তবে উইকেটের সুবিধা কাজে লাগানোর মতো বোলিংয়ের ধার তাদের খুব বেশি ছিল না।

প্রথম উইকেটটি অবশ্য দারুণ এক ডেলিভারিতেই আদায় করে নেয় তারা। তৃতীয় ওভারে বাঁহাতি পেসার কাবুয়া মোরেয়ার দারুণভাবে ভেতরে ঢোকা বল উড়িয়ে দেয় স্কটিশ অধিনায়ক কাইল কোয়েটজারের বেলস।

আরেক ওপেনার জর্জ মানজি ঝড়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। তবে আগ্রাসী শট খেলতে গিয়েই বিপজ্জনক এই ব্যাটসম্যান আউট হন ১০ বলে ১৫ করে।

২ উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে স্কটল্যান্ড তুলতে পারে মাত্র ৩৭ রান।

তবে ম্যাথু ক্রস ও বেরিংটন দারুণ জুটি গড়ে সেখান থেকে উদ্ধার করেন স্কটল্যান্ডকে। শুরুতে কিছুটা সময় নিয়ে পরে রানের গতি বাড়ান দুজন। তৃতীয় উইকেটে যোগ করেন ৬৫ বলে ৯২ রান।

নিজের পঞ্চাশতম টি-টোয়েন্টিতে একটুর জন্য পঞ্চাশ পাওয়া হয়নি ক্রসের। বাঁহাতি স্পিনার সাইমন আটাইয়ের আলগা এক শর্ট বলে ছক্কা মারার চেষ্টায় টাইমিং করতে না পেরে তার ইনিংস থামে ৩৬ বলে ৪৫ রানে।

বেরিংটন ফিফটি স্পর্শ করেন ৩৭ বলে। ফিফটির পরও তিনি এগিয়ে নেন দলকে। তবে আরেকপ্রান্তে ঝড় তুলতে পারেননি অন্যরা। দলের রান তাই আরও বাড়েনি।

৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৭০ করে বেরিংটন আউট হন শেষের আগের ওভারে। শেষ দুই ওভারে ১৫ রান তুলতে স্কটিশরা হারায় ৬ উইকেট। শেষ ওভারেই রানআউটসহ পড়ে ৪ উইকেট।

শেষ ওভারে তিনটিসহ মোট ৩১ রানে ৪ উইকেট নেন কাবুয়া মোরেয়া। এর আগে দুটি টি-টোয়েন্টি খেলে কোনো উইকেট ছিল না বাঁহাতি এই পেসারের। তাদের সেরা বোলার অবশ্য ছিলেন চাড সোপার, ২৪ রানে এই পেসার নেন ৩ উইকেট।

রান তাড়ায় পাপুয়া নিউ গিনি লড়াই করতে পারেনি শুরু থেকেই। দুই ওপেনারকে হারায় তারা ৪ ওভারের মধ্যে। অধিনায়ক আসাদ ভালা আউট হয়ে যান ৪টি চারে ১৮ রান করে। বড় ভরসা চার্লস আমিনি বিদায় নেন ১ রানেই।

পাওয়ার প্লেতেই ৩৫ রান তুলতে হারিয়ে ফেলে তারা ৫ উইকেট।

স্কটল্যান্ড তখন অনায়াস জয়ের পথে। তবে সাতে নামা নর্ম্যান ভানুয়া দারুণ ব্যাটিংয়ে কিছুটা জমিয়ে তোলেন ম্যাচ। ১৩ ওভার শেষে তার রান ছিল ২১ বলে ১৬। এরপর হুট করেই জ্বলে ওঠেন। ক্রিস গ্রিভসের ওভারে মারেন দুটি ছক্কা, বেন হুইলকে দুটি ছক্কা।

আরেক প্রান্তে কিপার কিপলিন ডোরিগাও গ্রিভসকে চার-ছক্কা মেরে জমিয়ে দেন ম্যাচ। নয়ে নেমে চাড সোপারও উপহার দেন বিশাল এক ছক্কা।

তাতে উত্তেজনা কিছু তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত পারেনি পাপুয়া নিউ গিনি। ভানুয়া আউট হন ৩৬ বলে ৪৭ রান করে। ডোরিগা থামেন ১৮ রানে।

প্রথম দিকে দুটির পর শেষ দিকে আরও দুটি উইকেট নেন ডেভি। দারুণ ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা যদিও বেরিংটন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

স্কটল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৬৫/৯ (মানজি ১৫, কোয়েটজার ৬, ক্রস ৪৫, বেরিংটন ৭০, ম্যাকলাউড ১০, লিস্ক ৯, গ্রিভস ২, ওয়াট ০, ডেভি ০, ইভান্স ০; পোকানা ৪-০-৩৭-০, আমিনি ৪-০-৪১-০, মোরোয়া ৪-০-৩১-৪, সোপার ৪-০-২৪-৩, সিয়াকা ১-০-৮-০, আটাই ৩-০-২০-১)।

পাপুয়া নিউ গিনি: ১৯.৩ ওভারে ১৪৮ (উরা ২, সিয়াকা ৯, ভালা ১৮, আমিনি ১, বাউ ২৪, আটাই ১, ভানুয়া ৪৭, ডোরিগা ১৮, সোপার ১৬, পোকানা ১, মোরিয়া ৬*; হুইল ৪-০-৪১-১, ডেভি ৩.৩-০-১৮-৪, ইভান্স ৩-০-২২-১, ওয়াট ৪-০-২৩-১, লিস্ক ২-০-১১-০, গ্রিভস ৩-০-৩১-১)।

ফল: স্কটল্যান্ড ১৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রিচি বেরিংটন।