হারের দায় তিন সিনিয়র ক্রিকেটারকে দিলেন বিসিবি সভাপতি

এমনিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে বরাবরই প্রবল উৎসাহী বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। তবে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পরদিন তিনি বললেন, “মেজাজ খারাপ, কথা বলতে চাই না।” পরে অবশ্য মুখের আগল ঠিকই খুলে দিলেন তিনি। এই হার তার কল্পনায়ও ছিল না। কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন দলের তিন সিনিয়র ক্রিকেটারকে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকমাসকাট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2021, 03:51 PM
Updated : 18 Oct 2021, 03:51 PM

দুবাইয়ে আইপিএল ফাইনাল দেখে বিসিবি সভাপতি মাসকাটে আসেন বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযান দেখতে। এখানে তার সঙ্গী আরও বেশ কজন বোর্ড পরিচালক। কিন্তু প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ার পর সবার মুখ এখন অন্ধকার।

সোমবার দুপুরে হোটেলে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নাজমুল হাসান বললেন, এই হার তাদের কাছে বড় বিস্ময় হয়ে এসেছে।

“মানে কখনও চিন্তাও করা হয়নি যে আমরা স্কটল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচটা হারতে পারি। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে অনুশীলন ম্যাচ হেরেছি, আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরেছি। কিন্তু তখনও মনে হয়েছে যে সাকিব নেই, রিয়াদ নেই ইনজুরির জন্য, মুস্তাফিজ নেই। তামিম নেই, বিশ্বকাপে সে নেই। একটা টিমের রেগুলার তিন-চারটা ক্রিকেটার যদি না খেলে, তা হলে এটা হতেই পারে।” 

“কিন্তু কাল তো সমস্যাটা ছিল না। কাল তো আমাদের পুরো দলই ছিল। সে জায়গায় আমরা এভাবে হেরে যাব, এটা কোনোভাবে কল্পনা, মানে কখনও চিন্তায়ও আসেনি মাথায়। সত্যি কথা বলতে, চিন্তাও করিনি যে স্কটল্যান্ডের কাছে হারতে পারি।”

হারের চেয়েও বিসিবি সভাপতি বেশি বিরক্ত দলের ব্যাটিংয়ের ধরনে। তিন সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ মিলে ৮৬ বল খেলে করেন ৮১ রান। ম্যাচ হারার জন্য তাদেরকেই দায় দিলেন বিসিবি সভাপতি।

“দল হারতেই পারে। কিন্তু অ্যাপ্রোচ তো ঠিক থাকবে। প্রথম ৬ ওভারে সুবিধা থাকে। তখন মারতে গেলে উইকেট পড়া স্বাভাবিক। কিন্তু দুটি উইকেট পড়ার পর সাকিব, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ যেভাবে ব্যাটিং করেছে, সেখানেই তো ম্যাচ হেরে গেছি আমরা। ওই সময় যেভাবে খেলা দরকার ছিল, ওইটা ওদের মধ্যে ছিল না।”

“আমাদের পরিকল্পনাও ভালো ছিল না। আমার মতে, ওখানে যেহেতু ৩ ওভারে উইকেট পড়ে গেছে, আরও ২ ওভার বাকি ছিল, অবশ্যই সেখানে ব্যাটিং পরিবর্তন করার দরকার ছিল। কাউকে তিনে খেলাতেই হবে, কাউকে চারে খেলাতেই হবে, সেটা তো পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। যেভাবে আমরা ব্যাটিং করেছি, ১৩-১৪ ওভার বলের চেয়ে রান কম করেছি। পরের ব্যাটসম্যানরা তো খেলার সুযোগই পাচ্ছে না। ওদের তখন অল আউট খেলা ছাড়া গতি নেই।”

বিসিবি সভাপতি টেনে আনলেন বিশ্বকাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবালকেও। আরও একজন ক্রিকেটারও বিশ্বকাপ খেলতে চাননি বলে জানালেন তিনি।

“একটা জিনিস আপনাদের বলতে পারি, তামিমের না খেলার ব্যাপারটা আপনারা জানার অনেক আগেই আমি জানি। এমনকি আমি ভেবেছিলাম, আরও একজন খেলবে না। এরকম তথ্যও আমার কাছে ছিল। কিন্তু খেলছে। আমার কথা হচ্ছে, এগুলা মনের মধ্যে রাখার তো কিছু নাই।”

“খেললে খেলবে, না খেললে নাই। সোজা বলে দেবে। কিন্তু অভিমান করে বলে দেবে আমি খেলব না, এটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কার সঙ্গে অভিমান, দেশের সঙ্গে? এদেশেই তো থাকতেছে সে। এই ধরনের আবেগের আমার কাছে কোনো জায়গা নেই। তবে একটা জিনিস সর্বশেষ বলে দিচ্ছি, যত ওপেনারই খেলুক না কেন, তামিমের চেয়ে ভালো ওপেনার একটাও নাই।”