বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে সেরার স্বীকৃতি জিতে কঠোর পরিশ্রমের কথা বলেছেন ফাখার জামান।
Published : 05 Nov 2023, 01:37 PM
এশিয়া কাপের পর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেও ব্যর্থতায় দল থেকে বাদই পড়ে গিয়েছিলেন ফাখার জামান। পাঁচ ম্যাচ বাইরে বসে থাকার পর ফের পেয়েছেন সুযোগ। দারুণভাবে তা কাজে লাগিয়ে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুই ম্যাচেই জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। পরে প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানিয়েছেন, কঠোর পরিশ্রমের কথা।
বেঙ্গালুরুতে শনিবার নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪০১ রান তাড়া করতে নেমে স্রেফ ৮১ বলে ১২৬ রান করেছেন ফাখার। ৮ চারের সঙ্গে ১১টি ছক্কায় সাজানো ইনিংসে তার হাতেই উঠেছে ম্যাচ সেরার পুরস্কার। এর আগে পাঁচ ম্যাচ পর সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩ চার ও ৭ ছক্কায় ৮১ রান করে একই স্বীকৃতি জিতেছেন বাঁহাতি ওপেনার।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ওই ফিফটির আগে টানা ১১ ইনিংসে একবারও ৩৫ রান করতে পারেননি ফাখার। ত্রিশ ছুঁতে পেরেছিলেন স্রেফ দুইবার। অথচ এর আগে নিউ জিল্যান্ডে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে টানা তিন ম্যাচে সেঞ্চুরি করে রীতিমতো উড়ছিলেন ৩৩ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। সেখান থেকে ছন্দ হারিয়ে বাদ পড়েন একাদশ থেকে।
সবশেষ এশিয়া কাপে চার ইনিংসে স্রেফ ৬৫ রান করেন ফাখার। পরে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে আউট হন ১২ রান করে। তার জায়গায় সুযোগ দেওয়া হয় আব্দুল্লাহ শাফিককে। তিনি ভালো করলেও আরেক ওপেনার ইমাম উল হকের ব্যর্থতায় পাঁচ ম্যাচ পর ফের একাদশে জায়গা পান ফাখার।
পরপর দুই ম্যাচে দল জেতানোর পর সেরার স্বীকৃতি পাওয়ার পর খারাপ সময় পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পটা জানান ফাখার।
“এই পর্যায়ে সবসময়ই উত্থান-পতন থাকে। এশিয়া কাপ আমার জন্য ভালো যায়নি। সর্বোচ্চ ৩০ রান করেছিলাম? (আসলে ২৭)। সময়টা ভালো ছিল না। আমি তখন পেশাওয়ারে গিয়ে আফতাব খানের (পাকিস্তানের ফিল্ডিং কোচ) সঙ্গে তার একাডেমিতে কাজ করি। অফ স্পিনের সামনে আমার দুর্বলতা তিনি দেখিয়ে দেন। তিনিও একজন অফস্পিনার ছিলেন। তার সঙ্গে অনেক কাজ করেছি আমি।”
ওই কাজের ফলও পেয়েছেন ফাখার। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে স্রেফ ৬৩ বলে সেঞ্চুরি গড়ে করেছেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বিশ্বকাপে দ্রুততম শতরানের রেকর্ড। ১১ ছক্কায় ছুঁয়েছেন শাহিদ আফ্রিদির এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছয়ের রেকর্ড। এর পেছনে আফতাবের বড় অবদান দেখেন ফাখার।
ম্যাচ সেরার পুরস্কার গ্রহণ করে নিজের কোচের কথা বলতে গিয়ে কিছুটা আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন ফাখার। কঠিন ওই সময় পেরিয়ে আলোর মুখ দেখায় আফতাবকেই সেঞ্চুরিটি উৎসর্গ করেন মারকুটে এই ওপেনার।
“পারফর্ম করার পর সব ক্রিকেটার বলে, ‘আমি এটা করেছি, ওটা করেছি।’ তবে আমি যখন (এশিয়া কাপের পরে) বিরতির সময় পেয়েছি, আমি বিশ্রাম নেইনি। স্রেফ দুই দিন বাড়িতে ছিলাম। এরপর সোজা পেশাওয়ারে চলে যাই অনুশীলনের জন্য। আমি এই পারফর্ম্যান্স আফতাব খানকে উৎসর্গ করতে চাই।”
“তিনি আমার সঙ্গে যেসব বিষয় ভাগাভাগি করেছেন, আমাকে যেভাবে সময় দিয়েছেন... খুব বেশি মানুষ আপনার প্রতি এত নিবেদন দেখাবে না। আপনার এমন মানুষ প্রয়োজন। যখন পারফর্ম্যান্স আসে, তখনই কঠোর পরিশ্রমটা দেখা। যখন (পারফর্ম) না করবেন, তখন দেখা যাবে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, আপনি পরিশ্রম করেননি।”