কোভিড: অ্যান্টিবডি সুরক্ষা দিচ্ছে কতটা, পরিমাপের পথ খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা

চিকিৎসকরা ২০১০ সালে বেন সোবিককে জানালেন, তার কিডনি দুটো দ্রুত বিকল হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেন হচ্ছে, তা তখনও অজানা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 April 2022, 06:24 PM
Updated : 2 April 2022, 06:24 PM

অল্প দিনের মধ্যেই তাকে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হল, এরপর জীবন হয়ে গেল পুরোপুরি ওষুধনির্ভর। ওই ওষুধ তার প্রয়োজন স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে রাখার জন্য; কারণ, তা না হলে অন্যের দেওয়া কিডনি শরীর প্রত্যাখ্যান করে বসতে পারে।

ঠিক কী কারণে সোবিকের কিডনি কার্যকারিতা হারিয়েছিল, তা আর জানাতে পারেননি চিকিৎসকরা। এক দশক পরে তার জীবনের জন্য নতুন হুমকি হয়ে এল কোভিড-১৯ মহামারী। সোবিকের বয়স এখন ৩৭ বছর।

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার বাসিন্দা সিবোক বলেন, “আমি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দমিয়ে রাখতে নিয়মিত ওষুধ নিচ্ছি, কিন্তু সেটাই আমার কোভিড জটিলতায় পড়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকলে আপনি হয়ত কোভিড টিকার খুব ভালো ফল পাবেন না।”

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিকভাবে কাজ করছে কি না জানতে ব্যতিক্রমী এক অনুরোধ করে বসেন সোবিক: তিনি তার নেফ্রোলজিস্টকে রক্তপরীক্ষা করতে বলেন যা থেকে শরীরে অ্যান্টিবডির গড় একটি পরিমাণ জানা যাবে।

সিএনএন এক প্রতিবেদনে লিখেছে, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল কেবল তারাই নন, আমেরিকার লাখো মানুষ জানতে চান, কোভিড সংক্রমণ এবং টিকার একটি বুস্টার ডোজ নেওয়ার পর তারা আসলে কতোটা সুরক্ষিত।

ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা আর নেই, অন্যান্য বিধিনিষেধও তুলে দেওয়া হয়েছে। জীবন ফিরে যাচ্ছে মহামারীর আগের মত স্বাভাবিক জীবনে। এখন কেউ যদি জানতে পারেন যে তার শরীরে টিকা বা আগের সংক্রমণের ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি কতটা কার্যকর রয়েছে, সেটা তার ঝুঁকি পরিমাপের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে।

সিবোক বলেন, “আমার অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করতে চাওয়ার বড় কারণ হল আমি জানি না কীভাবে ঝুঁকির মাত্রা নির্ণয় করা যায়। আমার মত যারা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে টিকে আছেন, তাদের এটা জানার খুব বেশি উপায় নেই। মহামারী শুরুর পর থেকে যে সমস্যাগুলো আমাদের সামনে আসছে, যেমন ঘর থেকে বের হব কি না, কখন কীভাবে বের হলে সেটা নিরাপদ হবে, অন্যদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করা উচিত হবে কিনা, এসব প্রশ্নের উত্তর আমাদের জানা নেই।”

মডার্নার কোভিড টিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ডোজ নেওয়ার পর প্রতিবারই তিনি অ্যান্টিবডির মাত্রা পরীক্ষা করিয়েছেন। প্রতিটি ফলাফলেই দেখা গেছে, পরীক্ষায় সর্বোচ্চ যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি শনাক্ত হওয়া সম্ভব, তার চেয়েও বেশি রয়েছে, যা শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেই নির্দেশ করে।

সংক্রমণ এবং রোগ প্রতিরোধের মাত্রা বুঝতে এ ধরনের পরীক্ষার ফল কীভাবে ব্যাখ্যা করা হবে তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা না থাকলেও সিবোক আশ্বস্ত হন, তার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ঠিকঠাক কাজ করছে।

নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল্যানগোন হেলথ বিভাগের সার্জারির অধ্যাপক ড. ডোরি সেজেভ বলেন, “অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা ৫০ শতাংশের বেশি রোগীরই পর্যাপ্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে না, এমনকি তারা যদি দুটির পরিবর্তে তিন ডোজ টিকাও নেন। তাদের দেহে আদৌ কোনো সুরক্ষা আছে কি না সেটা বুঝতে এটা [অ্যান্টিবডি টিটার] একটি ভালো সূচক।”

রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল, এমন লোকজনের শরীরের সুরক্ষা ব্যবস্থা যাচাইয়ের জন্য এ ধরনের পরীক্ষা করার পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন অঙ্গ প্রতিস্থাপনকারী চিকিৎসক সেজেভ।

আর এ পরীক্ষা নিজের এবং পরিবারের অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণেও সহায়ক হচ্ছে জানিয়ে সোবিক বলেন, “আমার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যথেষ্ট, এটা জানার মানে হল, আমার ছেলে এখন সশরীরে ক্লাসে যেতে পারবে। সেটাই অনেক।”

সুরক্ষার সঙ্গে আন্তঃসম্পর্ক

ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্ত পরীক্ষার তথ্য পর্যালোচনা করে ইউএস সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন- সিডিসি বলছে, ১৬ বছর ও তার বেশি বয়সী প্রায় ৯৫ শতাংশ আমেরিকানের দেহে কোভিড-১৯ এর অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে।

অ্যান্টিবডির মাত্রা এখানে একটি বিষয়। আরেকটি বিষয় পরিমাপ করা দরকার, তা হল ওই অ্যান্টিবডি কতটা সুরক্ষা দিতে পারবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ওষুধ প্রশাসন-এফডিএ অবশ্য অ্যান্টিবডির মাত্রা পরীক্ষা না করারই পরামর্শ দিচ্ছে, কারণ সংক্রমণ বা গুরুতর রোগ থেকে অ্যান্টিবডির কোন মাত্রা শরীরকে সুরক্ষা দেবে, সেটা হিসাব করার কোনো স্বীকৃত পদ্ধতি নেই। ফলে এই পরীক্ষা করে সুরক্ষিত থাকার একটি ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হতে পারে।

এমোরি ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজিস্ট মেহুল সুথার বলেন, অ্যান্টিবডির মাত্রার সঙ্গে সুরক্ষা সম্পর্ক জানার খুব ভালো কোনো উপায় নেই। এমন কিছু বলা সম্ভব না যে, এই পরিমাণ অ্যান্টিবডি থাকলে সেটা সুরক্ষিত থাকার নিশ্চয়তা দেবে।

বিজ্ঞানীরা অবশ্য জ্ঞানের এই ঘাটতি পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন গবেষণায় টিকার কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য কোনো একটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে অ্যান্টিবডির উপস্থিতির গড় মাত্রা পরিমাপ করা হচ্ছে। বুস্টার ডোজ দেওয়া দরকার কি না তা ঠিক করতে বেশিরভাগ সময় টিকা নেওয়ার কয়েক মাস পর অ্যান্টিবডির মাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মডার্নার টিকা নেওয়া লোকজনের ওপর পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, টিকা নেওয়ার পর উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবডির সঙ্গে কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি কমার সম্পর্ক রয়েছে।

তবে সব অ্যান্টিবডি একভাবে তৈরি হয় না। সংক্রমণের পর বা টিকা নেওয়ার পর শরীর যে অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে, তার খুব সামান্য একটি অংশকেই ‘নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি’ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে, অর্থাৎ তারা সক্রিয়ভাবে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে।

গুণগত এবং পরিমাণগত, দুইভাবেই অ্যান্টিবডি পরিমাপের পরীক্ষা হতে পারে। পরিমাণগত পরীক্ষা রক্তের মধ্যে অ্যান্টিবডির নির্দিষ্ট একটি সংখ্যা জানাতে পারে। আর নির্দিষ্ট একটি অ্যান্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করা যায় গুণগত পরীক্ষায়।

গুণগত পরীক্ষার ফল পজিটিভ অথবা নেগেটিভ হতে পারে। অর্থাৎ, ফলাফল বলে দেবে, একটি নির্দিষ্ট অ্যান্টিবডি শরীরে আছে কি নেই। আবার নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডির ক্ষেত্রে ফলাফল নাও জানা যেতে পারে।

শুধু নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডির উপস্থিতি শনাক্ত করার প্রশ্ন যখন আসে, তখন শুধু জরুরি ব্যবহারের জন্য এফডিএ এক ধরনের পরীক্ষারই অনুমোদন দেয়, তা হল গুণগত পরীক্ষা বা কোয়ালিটেটিভ টেস্ট।

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ এর উপসর্গযুক্ত সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ‘নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডির’ জোরালো সম্পর্ক রয়েছে। বুস্টার ডোজ এই সুরক্ষা আরও বাড়িয়ে দেয়।

অবশ্য, একজন ব্যক্তির শরীরের অ্যান্টিবডির মাত্রা পরীক্ষা করে কোনো উসংহারে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব। কারণ মানুষ থেকে মানুষে অ্যান্টিবডির মাত্রা অনেক আলাদা হয়ে থাকে।

তাছাড়া সুরক্ষার এই আন্তঃসম্পর্ক সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এবং করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ধরনের সঙ্গে সঙ্গে বদলায়, ফলে সুরক্ষার একটি সীমা নির্দিষ্ট করা কঠিন কাজ।

কোভিডে পাওয়া অ্যান্টিবডি বনাম টিকায় পাওয়া অ্যান্টিবডি

অ্যান্টিবডির মাত্রা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ সংমণের কারণে যাদের শরীরে অ্যান্টিবডি সৃষ্টি হয়েছে তাদের সঙ্গে টিকা নেওয়ার কারণে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডির একটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।

ড. সুথার বলেন, “আপনি টিকাপ্রাপ্ত সবার দেহে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাবেন, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকবে। ... আর আক্রান্ত হওয়ার পর যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তার মাত্রা একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম। আপনি অনেক মানুষ পাবেন, যাদের মধ্যে অ্যান্টিবডির মাত্রা খুব কম। আবার অনেককে পাবেন, যাদের রক্তে অতি উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিবডি রয়েছে।”

ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের রোগ প্রতিরোধবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ম্যারিয়ন পেপার বলছেন, শরীরের অঙ্গভেদে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিষয়টি ভিন্ন হতে পারে।

“দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা অনেকটা একই মহল্লায় থাকা প্রতিবেশীদের মত, প্রত্যেকের রুচি আলাদা।”

এটা নির্ভর করে একজন ব্যক্তি কীভাবে ভাইরাসের সংস্পর্শে আসছেন তার ওপর- তিনি কী বাহুতে টিকা নেওয়ার মাধ্যমে ভাইরাসটি পাচ্ছেন নাকি শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে সংক্রমিত হচ্ছেন, দুটি ক্ষেত্রে ফলাফল আলাদা হতে পারে।

প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা একটি গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে সিডিসি বলছে, টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অ্যান্টিবডি সংক্রমিত ব্যক্তিদের শরীরের অ্যান্টিবডির তুলনায় দ্রুত কমতে থাকে।

এই গবেষণা সম্ভবত টিকা নেওয়া এবং রোগ সংক্রমণের মাধ্যমে শরীরে শক্তিশালী ও টেকসই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার যেসব প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করবে। যাকে হাইব্রিড বা মিশ্র সুরক্ষা বলা হয়।

এক টুকরো সুরক্ষার ধাঁধাঁ

অ্যান্টিবডির মাত্রা দেহের সুরক্ষা ব্যবস্থার মাত্র একটি অংশ। এর পাশাপাশি আছে ‘টি সেল’, এটা এক ধরনের রক্তকোষ যা ভাইরাসে সংক্রমিত কোষটিকে মেরে ফেলে অথবা অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য আরেক ধরনের শ্বেত কনিকা - বি সেলকে সহায়তা করে।

তাহলে আমরা কেন শুধু অ্যান্টিবডির ওপর এতটা গুরুত্ব দিচ্ছি?

এমন প্রশ্নে ড. সুথার বলেন, এর একটি কারণ হল, অ্যান্টিবডির মাত্রা পরীক্ষাগারে সহজে পরীক্ষা করা যায়। টি সেলের মাত্রা বের করা আরও কঠিন কাজ।

ভাইরাসের বিরুদ্ধে টি সেল কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেটা একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। ফলে টি সেল বিশ্লেষণ করে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যায়।

অ্যান্টিবডি যেটা পারে না, সেটা করতে পারে টি সেল। এটা সংক্রমিত কোষকে ধ্বংস করে ফেলে। এ কারণে টি সেল হয়ত ওমিক্রণের মত অতিসংক্রামক ধরনের করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা প্রমাণে একটি বড় ভূমিকা পালন করছে।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অতিমাত্রায় রূপান্তরিত ওমিক্রন ধরনটি টিকার সুরক্ষাকে পাশ কাটিয়ে যেতে পারলেও এর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখায় টি সেল।

অধ্যাপক পেপার বলেন, “মেমোরি বি সেল হল এমন একটি কোষ যা পরবর্তী সময়ে একই ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য আবারও সক্রিয় হতে পারে। তবে টি সেল যদি সেটা করতে না বলে, তাহলে বি সেল অ্যান্টিবডি তৈরি করে না। তাই রোগ প্রতিরোধ ও সুরক্ষার বিষয়টি বোঝার জন্য টি সেল নিয়ে গবেষণা করা গুরুত্বপূর্ণ।”

ওমিক্রনের কারণে সংক্রমন বেড়ে যাওয়া প্রমাণ করেছে যে টিকা নেওয়া থাকলে বা আগে সংক্রমিত হলেও সংক্রমণের হার বাড়তে পারে। যেহেতু ভাইরাসের ধরনগুলোর আরও পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে গেছে, তাই কোভিড-১৯ একটি চলমান গবেষণার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। আর সেজন্য শরীরের সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে নতুন করে বোঝাপড়া দরকার।