কোভিড: দৈনিক শনাক্ত কমে দেড় হাজারের ঘরে

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমার ধারায় দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে এসেছে দেড় হাজারের ঘরে, পাশাপাশি শনাক্তের হারও আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কমেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Feb 2022, 10:31 AM
Updated : 22 Feb 2022, 10:55 AM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ১ হাজার ৫৯৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের।

আগের দিন সোমবার ১ হাজার ৯৫১ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, মৃত্যুর খবর এসেছিল ৯ জনের। সেই হিসেবে শনাক্ত রোগী কমলেও মৃত্যু কিছুটা বেড়েছে গত এক দিনে।

মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের  হার কমে ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ হয়েছে। সোমবার এই হার ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ ছিল।

নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৮৩৭ জন। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৯৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে এ ভাইরাসে।

সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ৮ হাজার ৩৫৭ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত ১৭ লাখ ৭১ হাজার ৬১৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

সে হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৩২ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। তবে উপসর্গবিহীন রোগীরা এই হিসাবে আসেনি।

বাংলাদেশে মহামারীর শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে।

এরপর আসে আরেক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এক পর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

এরপর সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে, ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তা পাঁচ হাজারের নিচে নামে। রোববার আরও কমে ২ হাজারের নিচে নেমে আসে।

মহামারীর মধ্যে সার্বিক শ‌নাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ।

গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ১ হাজার ২২০ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৭৬ শতাংশের বেশি।

যে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে সাতজন পুরুষ এবং নয়জন নারী। তাদের মধ্যে আটজন জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের তিনজন, রাজশাহী বিভাগের দুইজন, খুলনা বিভাগের একজন, সিলেট বিভাগের একজন এবং রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন একজন।

তাদের মধ্যে ১০ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, তিনজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ থেকে বছরের মধ্যে, দুইজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং একজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এ বছর ১২ ফেব্রুয়ারি তা ১৯ লাখ পেরিয়ে যায়। তার আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৮ লাখ ৯২ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪২ কোটি ৬১ লাখের বেশি।