স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ২৪ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ১৫০ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ১৩ জনের।
এক দিনে এর চেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ ৯ জানুয়ারি, সেদিন ১ হাজার ৪৯১ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। পরদিনই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২২ শ ছাড়িয়ে যায়।
শুক্রবার সারা দেশে ২ হাজার ৫৮৪ নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, মৃত্যু হয়েছিল ২৪ জনের। সেই হিসেবে গত এক দিনে শনাক্ত ও মৃত্যু দুটোই কমেছে।
গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার কমে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ হয়েছে। আগের দিন এই হার ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ ছিল। আর শনিবারের চেয়ে কম শনাক্তের হার ছিল সর্বশেষ ৯ জানুয়ারি, সেদিন প্রতি ১০০ নমুনা পরীক্ষায় ৬ দশমিক ৭৮ জনের কোভিড পজিটিভ হয়েছিল।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিস্তারে চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকে দ্রুত। গত ১২ জানুয়ারি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১০ শতাংশ ছাড়ায়। ২৮ জানুয়ারি তা পৌঁছায় ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায়।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯ লাখ ৩১ হাজার ৩০৪ জন। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৯৪৪ জনের প্রাণ গেছে এ মহামারীতে।
সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ৯ হাজার ৪৭৮ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৩৩২ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা এক লাখ ৫৭ হাজার ২৮ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ১ হাজার ৬৩৮ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৭৬ শতাংশের বেশি।
এর মধ্যে কেবল ঢাকা জেলাতেই ১ হাজার ৪৪৪ জনের কোভিড পজিটিভ হয়েছে। এছাড়া কক্সবাজারে ১২৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
দেশের আর কোনো জেলায় একশর বেশি রোগী শনাক্ত হয়নি গত এক দিনে। এই সময়ে ১৬ জেলায় নতুন কোনো কোভিড রোগী শনাক্ত হয়নি।
যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে সাতজন পুরুষ এবং ছয়জন নারী। তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের চারজন এবং রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও রংপুর বিভাগের একজন করে মোট চারজন মারা গেছেন।
তাদের ১০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া একজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, একজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এ বছর ১২ ফেব্রুয়ারি তা ১৯ লাখ পেরিয়ে যায়। তার আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৮ লাখের ৭৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪২ কোটি ১৮ লাখ।