কোভিড: দেশে দিনে শনাক্ত নেমেছে ৫ হাজারের নিচে

ওমিক্রনের দাপটে দেশে কোভিড রোগীর সংখ্যা মাঝে বাড়লেও এখন কমার ধারা চলছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Feb 2022, 10:27 AM
Updated : 16 April 2022, 10:29 AM

এক মাস পর এক দিনে শনাক্ত রোগী ৫ হাজারের নিচে নেমেছে, শনাক্তের হারও নেমেছে ১৫ শতাংশের নিচে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোববারের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩২ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ৪ হাজার ৮৩৮ জন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছে। তাতে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ৮৫।

নতুন শনাক্তদের নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৯ হাজার ৬৬৪ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাতে মহামারীতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৮১৯ জন।

সরকারি হিসাবে এই সময়ে সেরে উঠেছেন ১৩ হাজার ৮৫৩ জন। তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠলেন ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৫৫ জন।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ১১ হাজার ২৩৩ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। তবে উপসর্গবিহীন রোগীরা এই হিসাবে আসেনি।

বাংলাদেশে মহামারীর শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের দাপট পেরিয়ে এসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুইশর ঘরে নেমে এসেছিল গত বছরের শেষ দিকে।

এরপর আসে আরেক নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্রুত বাড়তে থাকে সংক্রমণ। এক পর্যায়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার ২৮ জানুয়ারি পৌঁছায় ৩৩ শতাংশের রেকর্ড উচ্চতায়।

এরপর সংক্রমণ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে, ৪ ফেব্রুয়ারি শনাক্ত রোগীর সংখ্যা নেমে আসে ১০ হাজারের নিচে। তার আট দিন পর তা পাঁচ হাজারের নিচে নামল।

এর আগে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ হাজারের নিচে ছিল গত ১৫ জানুয়ারি। সেদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ৩ হাজার ৪৪৭ জন রোগী শনাক্তের খবর জানিয়েছিল।

এর আগে দৈনিক শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের নিচে ছিল গত ১৪ জানুয়ারি। সেদিন নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ছিল ১৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা হয় ৩২ হাজার ৫৭৪টি নমুনা, তাদের শনাক্তের হার দাঁড়ায় ১৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

 

মহামারীর মধ্যে সার্বিক শ‌নাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ।

গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৩ হাজার ৩৮৬ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬৯ শতাংশের বেশি।

যে ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ এবং আটজন নারী। তাদের মধ্যে ১২ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের দুইজন, রাজশাহী বিভাগের চারজন, খুলনা বিভাগের ছয়জন, বরিশাল বিভাগের একজন, সিলেট বিভাগের একজন, ও রংপুর বিভাগের দুইজন বাসিন্দা ছিলেন।

তাদের ১৬ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, পাঁচজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, তিনজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, একজনের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে দুইজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং একজনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছরের ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৮ লাখের ছয় হাজারেরও বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৪০ কোটি ৯৬ লাখ।