কোভিড: আরও ৩৬ মৃত্যু, একদিনে শনাক্ত ১২১৯৩

দেশে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের বিস্তারের মধ্যে একদিনে আরও ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা সাড়ে চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Feb 2022, 10:49 AM
Updated : 2 Feb 2022, 11:33 AM

এক দিনে এর চেয়ে বেশি মৃত্যুর খবর এসেছিল সর্বশেষ গতবছরের ১৯ সেপ্টেম্বর, সেদিন ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৪৪ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১২ হাজার ১৯৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

আগের দিন মঙ্গলবার ১৩ হাজার ১৫৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, মৃত্যু হয়েছিল ৩১ জনের। সে হিসেবে শনাক্ত রোগী আগের দিনের চেয়ে কিছুটা কমেছে, তবে মৃত্যু বেড়েছে।

নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ২৪ হাজার ১৮০ জনে। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৪৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন চার হাজার ২০৩ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ১৩৭ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা দুই লাখ ২০ হাজার ৫৮২ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। তবে উপসর্গবিহীন রোগীরা আক্রান্তরা এই হিসাবেই আসেনি।

গতবছর অগাস্টের পর সোমবার প্রথমবারের মত দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়ায়। ১৫ জানুয়ারি এই সংখ্যা ছিল ৩১ হাজারের ঘরে।

ওমিক্রণের বিস্তারের মধ্যে জানুয়ারি মাসে ২ লাখ ১৩ হাজার ২৯৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৩২২ জনের। তার আগের মাস ডিসেম্বরে শনাক্ত রোাগীর সংখ্যা ছিল ৯ হাজার ২৫৫ জন, আর সারা মাসে ৯২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

মহামারীর পুরো সময়ে এক মাসে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল গতবছর জুলাই মাসে, সখন ডেল্টার দাপট চলছে। ওই মাসে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ২২৬ জন রোগী শনাক্ত হয়, মৃত্যু হয় ৬১৮২ জনের, যা এক মাসের সর্বোচ্চ।

ওমিক্রনের বিস্তারের মধ্যে এবার মৃত্যুর সংখ্যা ওই সময়ের তুলনায় কম হলেও নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দৈনিক শনাক্ত রোগীর হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশের নতুন রেকর্ডে পৌঁছায় গত ২৮ জানুয়ারি।

বুধবার নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে। মহামারীর মধ্যে সার্বিক শ‌নাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৫১ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।

গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে সাত হাজার ৩৭৫ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬০ শতাংশের বেশি।

যে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ, ১৯ জন নারী। তাদের মধ্যে ১৩ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচজন, রাজশাহী বিভাগের ছয়জন, খুলনা বিভাগের সাতজন, বরিশাল বিভাগের তিনজন, সিলেট বিভাগের একজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন একজন।

গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ২২ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, সাতজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, চারজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর,দুইজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর এবং একজনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এ বছর ১ ফেব্রুয়ারি তা ১৮ লাখ পেরিয়ে যায়। তার আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

বিশ্বে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছে ৫৬ লাখ ৮৮ হাজারের বেশি মানুষ। বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ৩৮ কোটি ১৭ লাখ।