স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে,
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সোয়া ৪১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ১০ হাজার ৮৮৮
জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। নতুন রোগী পাওয়া গেছে দেশের ৬৪ জেলাতেই।
একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল
সর্বশেষ গত বছরের ১০ অগাস্ট, সেদিন ১১ হাজার ১৬৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।
বুধবার ৯ হাজার ৫০০ জন নতুন রোগী শনাক্তের
কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সে হিসাবে গত একদিনে রোগী বেড়েছে ১ হাজার ৩৮৮ জন,
বা ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।
জানুয়ারির প্রথম দিনও শনাক্ত রোগীর
সংখ্যা ছিল চারশর নিচে, ৬ জানুয়ারি তা হাজার ছাড়ায়, ১৬ জানুয়ারি পেরিয়ে যায় ৫ হাজারের
ঘর। এরপর মাত্র চারদিনে তা দ্বিগুণ হল।
বৃহস্পতিবার নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে
শনাক্তের হার আরও বেড়ে ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ হয়েছে, যা গত বছরের ৫ অগাস্টের পর সর্বোচ্চ।
সেদিন শানাক্তের হার ছিল ২৭ দশমিক ১১ শতাংশ।
মহামারীর বছর গড়ানোর পর ডেল্টার
দাপটে বাংলাদেশে দিনে রোগী শনাক্তের হার ৩২ শতাংশে উঠেছিল ২০২১ সালে। তবে এরপর
সংক্রমণের হার কমতে কমতে ২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল।
নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের
প্রভাবে ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে আবার তা বাড়ছে। দৈনি নমুনা পরীক্ষা বাড়লে এই হার
৪০ শতাংশও হতে পারে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কারও কারও ধারণা।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত
কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ১৮২ জনে। গত এক দিনে আরও ৪ জনের মৃত্যু
হওয়ায় মহামারীতে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮ হাজার ১৮০ জনে দাঁড়াল।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে
উঠেছেন ৫৭৭ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর
সংখ্যা ৭০ হাজার ১৫৭ জন। অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে।
আগের
দিন এই সংখ্যা ছিল ৫৯ হাজার ৮৫০ জন। ১০ জানুয়ারি ছিল ১৬ হাজার ৭১৩ জন হয়।
অর্থাৎ, মাত্র দশ দিনে সক্রিয় রোগী বেড়ে প্রায় চারগুণ হয়েছে।
মহামারীর মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার
দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭০ শতাংশ।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৭
হাজার ৮৪৩ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের প্রায় ৭২ শতাংশের বেশি।
এ বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলায় ৭৩৪৯
জন, গাজীপুরে ১২৯ জন, নারায়ণগঞ্জে ১০৭ জনের কোভিড শনাক্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে
চট্টগ্রাম জেলায় ৯৩০ জন, কক্সবাজারে ১৪১ জন; রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলায় ১৫৬
জন, বগুড়ায় ১৩৭ জন এবং সিলেট জেলায় ২২৯ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে গত এক দিনে।
যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের একজন
পুরুষ, তিনজন নারী। তাদের মধ্যে দুইজন ছিলেন ঢাকা বিভাগের। বাকী দুইজন চট্টগ্রাম বিভাগের
বাসিন্দা ছিলেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে একজনের
বয়স ৬০ বছরের বেশি, একজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের
মধ্যে এবং একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ
ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এ বছর ১২ জানুয়ারি তা ১৬ লাখ পেরিয়ে যায়।
তার আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক
বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০
সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫
ডিসেম্বর কোভিডে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪
জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা
ইতোমধ্যে ৫৫ লাখ ৬৬ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ৩৩ কোটি ৮০ লাখের বেশি রোগী।