স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার
৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৮ হাজার ৪০৭ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
সোমবার গত এক দিনে ৩১ হাজার ৯৮০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬ হাজার ৬৭৬ জনের
করোনাভাইরাস শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
সে হিসাবে গত একদিনে রোগী বেড়েছে ১ হাজার ৭৩১ জন, যা
আগেরদিনের চেয়ে ২৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেশি।
একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ গত বছরের ১৩ অগাস্ট, সেদিন
৮ হাজার ৪৬৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।
মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ৯৮ শতাংশে,
যা গত বছরের ১৩ অগাস্টের পর সর্বোচ্চ। সেদিন শানাক্তের হার ছিল ২৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ
৩২ হাজার ৭৯৪ জনে। গত এক দিনে আরও ১০ জনের মৃত্যু হওয়ায় মহামারীতে বাংলাদেশে মৃতের
সংখ্যা বেড়ে ২৮ হাজার ১৬৪ জনে দাঁড়াল।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ৪৭৫ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত
১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৭৯৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।
এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার ৮৪৫ জন।
অর্থাৎ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে।
মহামারীর বছর গড়ানোর পর ডেল্টার দাপটে বাংলাদেশে দিনে রোগী শনাক্তের
হার ৩২ শতাংশে উঠেছিল ২০২১ সালে। তবে এরপর সংক্রমণের হার কমতে কমতে নেমেছিল ২
শতাংশের নিচে।
ডিসেম্বরের
মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এরমধ্যেই বিশ্বে
শুরু হয় ওমিক্রনের ত্রাস। জানুয়ারির শুরু থেকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা
প্রতিদিনই বাড়ছে।
জানুয়ারির প্রথম দিন দেশে সক্রিয় রোগীর মোট সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৫২৯
জন। ১০ জানুয়ারি তা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ, ১৬ হাজার ৭১৩
জন হয়। তার পরের আট দিনেই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে তিন গুন হল।
মহামারীর মধ্যে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে সার্বিক শনাক্তের হার
দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭২ শতাংশ।
গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৬ হাজার ৫৯৭ জনই ঢাকা বিভাগের
বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৭৮ শতাংশের বেশি। কেবল রাজবাড়ী ছাড়া দেশের বাকি ৬৩
জেলাতেই গত এক দিনে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
গত এক দিনে যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৮ জন পুরুষ, ২ জন নারী।
তাদের মধ্যে ৭ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের। ১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ১ জন খুলনা বিভাগের
এবং ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৬ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, ৪ জনের বয়স ৫১
থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ছিল।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮
মার্চ। এ বছর ১২ জানুয়ারি তা ১৬ লাখ পেরিয়ে যায়।
তার আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে গত বছরের ২৮
জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ২০২০ সালের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম
মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গত বছর ৫ ডিসেম্বর কোভিডে মোট
মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা
মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫৫ লাখ ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে।
আর শনাক্ত হয়েছে ৩৩ কোটি ১০ লাখের বেশি রোগী।