এখন আক্রান্তদের ১৫-২০% ওমিক্রনের রোগী: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশেও এখন করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে বলে স্বীকার করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2022, 02:14 PM
Updated : 12 Jan 2022, 02:14 PM

ঢাকার বাইরে প্রথম ওমিক্রনের রোগী শনাক্তের দিন বুধবার এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেছেন, এখন আক্রান্তদের ‘১৫-২০ শতাংশই’ করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।

দুই বছর আগে বিশ্বে মহামারী বাঁধিয়ে দেওয়ার পর নতুন করোনাভাইরাস রূপ বদল করে চলছে। গত বছরের শুরুতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটের বছরের শেষে আসে ওমিক্রন।

ওমিক্রনের সংক্রমণে আমেরিকা ও ইউরোপে রোগীর সংখ্যা আবার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বাড়ছে প্রতিবেশী দেশ ভারতেও।

বাংলাদেশেও কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করেছে। এরমধ্যে ডিসেম্বরে ওমিক্রনের প্রথম রোগী (বিদেশ থেকে আসা) ধরা পড়ার পর এখন অবধি ৩৩ জন শনাক্ত হলেও দেশের অভ্যন্তরে ছড়ানোর পড়ার বিষয়ে সরকারি ভাষ্য মিলছিল না।

বুধবার মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জন, বিসিপিএস ভবনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এনিয়ে মুখ খোলেন।

তিনি বলেন, “যে হারে রোগী বাড়ছে, তাতে ওমিক্রনের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন কিছুটা হয়েছেই।

“আমাদের যে স্ট্যাটিসটিকস আসছে, তাতে দেশে এখন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ করোনা রোগীই ওমিক্রনে আক্রান্ত। কাজেই কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়েছে বলে অমি মনে করি।”

দেশে গত কয়েকদিন ধরে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। বুধবার পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৬ লাখ ছাড়িয়েছে।

এদিন শনাক্ত হয়েছে প্রায় তিন হাজার রোগী। দৈনিক শনাক্তের হারও প্রায় ১২ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা ১২ দিন আগেও ছিল ৩ শতাংশের নিচে।

গত ১১ ডিসেম্বর জিম্বাবুয়ে ফেরত দুই নারী ক্রিকেটারের ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার খবর সরকারিভাবে জানানো হয়েছিল।

এরপর গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর একজন এবং ২৮ ডিসেম্বর চারজন, ৩১ ডিসেম্বর তিনজন শনাক্তের খবর জানায় জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা (জিআইএসএআইডি)। এ বছরের ৬ জানুয়ারি ১০ জন, ৭ জানুয়ারি একজন, ১০ জানুয়ারি নয় জনের শরীরে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের তথ্য আসে জিআইএসএআইডির ওয়েবসাইটে।

‌এতদিন পর্যন্ত ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যাচ্ছিল ঢাকায়। বুধবার সীমান্তবর্তী জেলা যশোরে তিনজনের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়ার কথা জানায় জিআইএসএআইডি।

ওই তিনজনের মধ্যে দুজন ভারতীয় নাগরিক অন্যজন বাংলাদেশি। আর ওই বাংলাদেশি বিদেশ যাননি, অর্থাৎ দেশে থেকেই তিনি সংক্রমিত হয়েছেন।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করোনাভাইরাস আক্রান্ত ওই তিনজনের নমুনা সংগ্রহের পর জিনোম সিকোয়েন্স করে তা জিআইএসএআইডিতে দিয়েছিল।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক ড. ইকবাল কবীর জাহিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওমিক্রন শনাক্ত হওয়া বাংলাদেশি নাগরিকের বিদেশ ভ্রমণের কোনো ইতিহাস নেই। বিদেশ ফেরত কারও সংস্পর্শে আসার কথাও জানা যায়নি।”

এ কারণে তারা ধরে নিচ্ছেন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের ‘কমিউনিটি ট্রান্সমিশন’ দেশে শুরু হয়েছে।

ওমিক্রন দ্রুত বিস্তার ঘটালেও এতে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার হার এখনও কম দেখছেন গবেষকরা।

এদিকে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবের পর সংক্রমণ এড়াতে কিছু বিধি-নিষেধ ফিরিয়ে এনেছে সরকার।

অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে গণপরিবহন চলবে, উন্মুক্ত স্থানে সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন কিংবা রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।