কোভিড: ইউরোপে দেশে দেশে রেকর্ড সংক্রমণ, ফ্রান্সে এক দিনেই ১ লাখ ৮০ হাজার রোগী শনাক্ত

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপটে টালমাটাল ইউরোপে কেবল ফ্রান্সেই এক দিনে ১ লাখ ৭৯ হাজারের বেশি মানুষের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। 

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2021, 03:44 AM
Updated : 29 Dec 2021, 03:45 AM

বিবিসি জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর ইউরোপের আর কোনো দেশে আর কখনও এক দিনে এত বেশি রোগী শনাক্ত হয়নি।

ফ্রান্সে মঙ্গলবার শনাক্ত হয়েছে মোট ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮০৭ জন নতুন রোগী। আর মৃত্যু হয়েছে ২৯০ জনের।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর ৮৬ হাজার ৮৫২ জনের কোভিড ধরা পড়েছিল ফ্রান্সে। এরপর গত শনিবার প্রথমবারের মত এক দিনে ১ লাখের বেশি রোগী শনাক্তের রেকর্ড হয় পশ্চিম ইউরোপের এই দেশে। সেই রেকর্ড তিন দিনও টিকল না। 

কেবল ফ্রান্স নয়, এক দিনে শনাক্ত রোগীর নতুন রেকর্ড হয়েছে ইতালি, গ্রিস, পর্তুগাল আর ইংল্যান্ডেও।

ইতালিতে ৭৮ হাজার, পর্তুগালে ১৭ হাজার ১৭২, গ্রিসে ২১ হাজার ৬৫৭ এবং ইংল্যান্ডে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ২৪ ঘণ্টায়।  

বিবিসি লিখেছে, বড়দিনের ছুটির মধ্যে কোভিড পরীক্ষা বিলম্বিত হওয়ার বিষয়টিও এক দিনে দেশে দেশে রেকর্ড রোগীর তথ্য আসার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। 

বড়দিনের উৎসবের মৌসুমের শুরু থেকেই ইউরোপজুড়ে বাড়ছে কোভিড রোগীর সংখ্যা। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক দেশই নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল, এবারের বড়দিনে উৎসব-আয়োজনে লাগাম দিতে অনুরোধ করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।     

একটি গবেষণায় দেখা গেছে,ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে যাওয়ার মত গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি করোনাভাইরাসের আগের ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টা চেয়ে ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ কম।

তবে নতুন এ ধরনটি অনেক বেশি সংক্রামক হওয়ায় একসঙ্গে অনেক বেশি মানুষ আক্রান্ত হলে হাসপাতালে চাপ সামলানো কঠিন হবে এবং তাতে পুরো ইউরোপের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধসে পড়ার দশা হবে বলে সতর্ক করে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মহামারী পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার সাপ্তাহিক যে প্রতিবেদন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাত দিনে ইউরোপে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। আর আমেরিকা অঞ্চলে বেড়েছে ৩০ শতাংশ। 

ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অলিভার ভেরান গত সোমবার সতর্ক করে বলেছিলেন, পরিস্থিতি যে দিতে যাচ্ছে, তাতে জানুয়ারির শুরুর দিকে সেখানে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আড়াই লাখও ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর ফ্রান্স হসপিটাল ফেডারেশন হুঁশিয়ার করে বলেছে, সবচেয়ে খারাপ সময়টা হয়ত এখনো আসেনি।

পরিস্থিতি সামাল দিতে গত সপ্তাহ থেকে নতুন কড়াকড়ি আরোপ করেছে ফ্রান্স সরকার। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন বাসা থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে। বড় ধরনের জনসমাগমে আরোপ করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

গণপরিবহনে পানাহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পাশাপাশি ঘরের বাইরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আবার। ফ্রান্সের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সুপারিশে কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়ার কাজও জোরদার করা হয়েছে।