সিএনএন জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি থাকে ডেল্টার তুলনায় এক তৃতীয়াংশ।
আর দক্ষিণ আফ্রিকায় পরিচালিত আরেক গবেষণায় এই ঝুঁকি ৮০ শতাংশ কম দেখা গেছে।
তবে ওমিক্রনে আক্রান্ত কাউকে যদি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, গুরুতর জটিলতার ঝুঁকির ক্ষেত্রে ডেল্টার সঙ্গে কোনো পার্থক্য থাকে না বলে দেখা গেছে দ্বিতীয় গবেষণায়।
সিএনএন জানিয়েছে, দুটো গবেষণার এই ফলাফলই প্রকাশ করা হয়েছে প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে। গবেষণাপত্রগুলোর কোনো পিয়ার রিভিউ এখনও হয়নি।
বিবিসি লিখেছে, ওমিক্রনের কারণে গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি যদি কমও হয়, এর ব্যাপক সংক্রমণের মাত্রা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।
যুক্তরাজ্যে বুধবার এক দিনেই এক লাখের বেশি মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, যা এ যাবৎকালের রেকর্ড।
ফ্রান্সেও শিগগিরই দৈনিক লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হতে পারে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
অসুস্থতার মাত্রা যদি কমও হয়, হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে গেলে তা বড় ধরনের জটিলতায় ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্ক উলহাউজ বলেন, “আক্রান্তদের বড় একটি অংশের ক্ষেত্রে উপসর্গ বা অসুস্থতা তুলনামূলকভাবে মৃদু হতে পারে। কিন্তু একসঙ্গে এত লোক যদি আক্রান্ত হয়, তাহলে হাসপাতালের ওপর ভয়ঙ্কর চাপ পড়বে।”
ডেল্টার সঙ্গে তুলনা করলে ওমিক্রনে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কেন কম, সে বিষয়ে দুটো ধারণার কথা বলছেন গবেষকরা।
ওমিক্রনের জিন বিন্যাসে যে বিপুল সংখ্যক মিউটেশন বা পরিবর্তন এসেছে, সে কারণেই এ ভাইরাসের গুরুতর অসুস্থ করে ফেলার ক্ষমতা কমেছে বলে লন্ডন ইমপেরিয়াল কলেজের একটি গবেষণায় ধারণা পাওয়া গেছে।
সেখানে দেখা গেছে, যারা আগে কখনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি বা টিকাও নেননি, অর্থাৎ যাদের শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়নি, তাদের ক্ষেত্রে ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে যাওয়ার ঝুঁকি ডেল্টার তুলনায় ১১ শতাংশ কম থাকে।
কিন্তু যুক্তরাজ্যের মত দেশে, যেখানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এবং টিকা দেওয়ার হার দুটোই অনেক বেশি, সেখানে ওই তথ্য পুরোপুরি মিলবে না।
ওই একই গবেষণা বলছে, যাদের দেহে আগের সংক্রমণ বা টিকায় পাওয়া অ্যান্টিবডি রয়ে গেছে, তারা ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে যাওয়ার ঝুঁকি ৩০ শতাংশ কমে যেতে পারে।
এই গবেষণায় যুক্ত অধ্যাপক নিল ফার্গুসন বলেন, “এটা একটা ভালো খবর, অন্তত একটা পর্যায় পর্যন্ত। তবে ঝুঁকির মাত্রা যতটা কমবে তাতে পরিস্থিতির নাটকীয় কোনো পরিবর্তন হবে না। যে গতিতে এটা ছড়াচ্ছে, তাতে একসঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হলে বিপদটা থেকেই যাবে।”