ওমিক্রন সংক্রমণে লক্ষণ মৃদু দেখেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার চিকিৎসক

করোনাভাইরাসের নতুন যে ধরন বিশ্বে উদ্বেগ তৈরি করেছে, তার শুরুর দিককার রোগী যিনি শনাক্ত করেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সেই চিকিৎসক বলছেন, ওমিক্রন সংক্রমিত রোগীদের লক্ষণ মৃদু এবং ঘরে থেকেই এর চিকিৎসা সম্ভব।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2021, 06:30 PM
Updated : 29 Nov 2021, 06:30 PM

নতুন করোনাভাইরাস মানবদেহে সংক্রমণের পর অসংখ্যবার রূপবদল করলেও এক বছরের বেশি সময় পর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টই মহামারীর মাত্রা ভয়াবহ করে তোলে। এরপর টিকা যখন মহামারি নিয়ন্ত্রণের আশা দেখাচ্ছিল, তখন এসেছে ভাইরাসটির নতুন রূপ ওমিক্রন।

দক্ষিণ আফ্রিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপারসন ডা. অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজি সংক্রমণের শুরুর দিকেই ওমিক্রন সংক্রমিত রোগী শনাক্ত করেন।

এই চিকিৎসক রয়টার্সকে বলেছেন ওমিক্রন সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে তিনি কী ধরনের লক্ষণ দেখেছেন, তাদের চিকিৎসাইবা কী দিয়েছেন।

ডা. কোয়েটজি বলেন, গত ১৮ নভেম্বর তিনি তার হাসপাতালে সাতজন কোভিড-১৯ রোগীকে পান, যাদের লক্ষণ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তদের চেয়ে ভিন্ন।

তার ভাষায় এই রোগীদের লক্ষণ ছিল ‘খুব মৃদু’।

দক্ষিণ আফ্রিকার সংক্রামক রোগ বিষয়ক জাতীয় ইনস্টিটিউট গত ২৫ নভেম্বর ওমিক্রন সংক্রমণ শনাক্তের খবর আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়। তার আগে ১৫ ও ১৬ নভেম্বর একটি পরীক্ষাগার থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয় প্রতিষ্ঠানটি।

ডা. কোয়েটজি বলেন, তার হাসপাতালের এক রোগী ১৮ নভেম্বর এক রোগী বেশ অবসাদের কথা জানিয়েছিল, তার আগে দুই দিন মাথায় ও গায়ে ব্যথা ছিল।

 “তখন তার লক্ষণগুলো ছিল সাধারণ ভাইরাস সংক্রমণের মতোই। তবে গত আট থেকে ১০ সপ্তাহে আমরা কোনো কোভিড রোগী না পাওয়ায় তার নমুনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিই।”

ওই হাসপাতালে ঠিক ওই দিনই আরও কয়েকজন রোগী একই ধরনের সমস্যার কথা জানালে চিন্তায় পড়েন ডা. কোয়েটজি। তার মনে হল, অন্য কিছু একটা ঘটছে। এরপর দিনে এ ধরনের দুই থেকে তিন রোগী মিলছিল।

ওমিক্রনে আক্রান্তদের লক্ষণ বর্ণনা করে তিনি বলেন,তার হাসপাতালে আসা সবারই দুই-তিন দিন দুর্বলভাব ছিল, তার সঙ্গে ছিল গা ও মাথায় ব্যথা।

ডা. অ্যাঞ্জেলিক কোয়েটজি

এই চিকিৎসক বলেন, সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ে ডেল্টায় আক্রান্ত অনেক রোগী পেয়েছিলেন তারা। তবে এবারের চিত্র সেবারের মতো নয়।

“বেশিরভাগেরই লক্ষণ খুবই মৃদু। তাদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া গেছে।”

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের রোগীদের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, আক্রান্তরা স্বাদ কিংবা ঘ্রাণ হারাচ্ছে না, আর দেহে অক্সিজেনের মাত্রা অনেক কমে যাওয়ার ঘটনাও দেখা যাচ্ছে না।

ডা. কোয়েটজি দেখেছেন,ওমিক্রনে আক্রান্তদের বয়স ৪০ বছর কিংবা তারও নিচে।

আর এদের অধিকাংশই টিকা নেননি বলে জানান দক্ষিণ আফ্রিকায় কোভিড টিকা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির এই সদস্য।

প্রাথমিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিশেষজ্ঞরা এটুকু ধারণা করতে পারছেন যে এ ধরনটি আরও বেশি সংক্রামক এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে সক্ষম।

ভারতে উদ্ভূত ডেল্টার মতো ওমিক্রনকেও ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এটার সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগে বিভিন্ন দেশ আবারও বিদেশিদের জন্য ‍দুয়ার বন্ধ করতে শুরু করেছে।