কোভিড: দেশে নমুনা পরীক্ষা ১ কোটি ছাড়াল

১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর দেড় বছর পর নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2021, 07:08 PM
Updated : 13 Oct 2021, 07:08 PM

বুধবার পর্যন্ত সারাদেশে ১ কোটি ২০ হাজার ৬৯৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরমধ্যে ৭৩ লাখ ৪৯ হাজার ৭৩৯টি নমুনা সরকারি ব্যবস্থাপনায় করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৯৫৮টি।

বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় নমুনা পরীক্ষা পর্যাপ্ত কি না- জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজির আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যথেষ্ট নয়।

তার ভাষ্য, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের সংস্পর্শে অথবা যেসব এলাকায় বেশি সংক্রমণ হয়েছিল সেসব এলাকায় নমুনা পরীক্ষা করা দরকার ছিল। কিন্তু নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে লক্ষণ-উপসর্গ দেখে, স্বপ্রণোদিত হয়ে যারা এসেছে তাদের। আবার যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে এসেছে তাদের সবারও নমুনা নেওয়া যায়নি।

“কারণ প্রতিটি সেন্টারের একটা সীমা ছিল। সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি বা এলাকাভিত্তিক নমুনা পরীক্ষা করতে পারলে আরও বেশি পরিমাণে আরও দ্রুত রোগী শনাক্ত করা যেত।”

নমুনা পরীক্ষা যথেষ্ট না হওয়ায় সংক্রমণ বেড়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

“যে রোগীটাকে আমরা শনাক্ত করতে পারিনি সে আবার রোগ ছড়িয়েছে। নমুনা বেশি পরিমাণে করলে আমরা সংক্রমণটা কমাতে পারতাম।”

আইইডিসিআর’র উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আরও বেশি নমুনা পরীক্ষা হলে ভালো হত, তবে দেশের সক্ষমতা অনুযায়ী পরীক্ষা ঠিক আছে।

“যখন সংক্রমণ শুরু হয় তখন আমাদের দেশে নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা কম ছিল। আমাদের তো একদমই ক্যাপাসিটি ছিল না। সেখান থেকে অনেকখানি উন্নতি হয়েছে। সেটাও বিবেচনা করতে হবে।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশ করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার যে সক্ষমতা অর্জন করেছে, তা ধরে রাখতে হবে সংক্রমণ পরিস্থিতি নজরদারীর জন্য। 

“ল্যাবের সক্ষমতা যেটা আছে তা আরও সিস্টেমিটেক্যালি করতে হবে যেন দেশের যে কোনো প্রান্তের মানুষ রোগ পরীক্ষার সুযোগটা পায়।”

ফাইল ছবি

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর গত বছরের জানুয়ারি থেকে বিদেশ ফেরতদের নমুনা পরীক্ষা শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। সেদিন ৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্তের কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একদিনে সর্বনিম্ন নমুনা পরীক্ষা এটাই।

নমুনা পরীক্ষার হিসাবও ৮ মার্চ থেকে দেওয়া হচ্ছে।

গত বছরের মার্চে নমুনা পরীক্ষা শুরুর পর ৯ এপ্রিল দৈনিক নমুনা পরীক্ষা ১ হাজার ছাড়ায়। সংখ্যাটি ১০ হাজার ঘর ছোঁয় ওই বছরের ২০ মে।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে দাপট শুরুর পর এ বছরের ১৬ মার্চ নমুনা দৈনিক নমুনা পরীক্ষা ২০ হাজার ছাড়ায়। এছাড়া ৪ এপ্রিল ৩০ হাজার, ১১ জুলাই ৪০ হাজার এবং ২৬ জুলাই দৈনিক নমুনা পরীক্ষা ৫০ হাজার ছাড়ায়।

একদিনে সবচেয়ে বেশি ৫৫ হাজার ২৮৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এ বছরের ৩ অগাস্ট।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, বুধবার পর্যন্ত ৮২৮টি পরীক্ষাগারে এসব নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এরমধ্যে ১৪৯টি আরটি-পিসিআর, ৫৬টি জিন এক্সপার্ট এবং ৬২৩টি ল্যাবে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হয়।

সবচেয়ে বেশি ১০ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯৬টি নমুনা পরীক্ষা করেছে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে।