কোভিড: দিনে শনাক্তের হার আবার ৩ শতাংশের উপরে

এক দিনের ব্যবধানে দেশে দিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার আবার বেড়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2021, 11:37 AM
Updated : 4 Oct 2021, 12:12 PM

সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগের ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ২৫ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ৭৯৪ জন কোভিড রোগী শনাক্তের কথা জানায়।

সেই অনুযায়ী, দৈনিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ।

সাত মাস পর আগের দিন শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে নামার তথ্য এসেছিল। শনাক্তের হার ছিল ২ দশমিক ৯০ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে ৭৯৪ জন রোগী শনাক্ত হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ৭৫৮।

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ১৮ জন। তাদের নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার ৫৯১।

এই সময়ে সেরে উঠেছে ৮৩৪ জন, তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠল ১৫ লাখ ১৯ হাজার ৫৮৮ জন।

এই হিসাবে দেশে বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা মাত্র ১১ হাজার ৫৭৯ জন। অর্থাৎ দেশে এখন এই সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাস সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে।

অথচ গত অগাস্ট মাসে দিনে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা লাখের উপরে উঠেছিল।

মহামারীর বছর গড়িয়ে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে গত মার্চ মাসের পর থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। জুলাই ও অগাস্ট ভয়াবহ অবস্থা পার করে বাংলাদেশ।

২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট দুদিনই ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা। দৈনিক শনাক্তের হার ৩২ শতাংশও ছাড়িয়েছিল তখন।

সেপ্টেম্বর থেকে ধীরে ধীরে সংক্রমণের গতি কমতে থাকে। সাড়ে ছয় মাস পর দৈনিক শনাক্তের হার গত ২১ সেপ্টেম্বর ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে। রোববার তা ৩ শতাংশের নিচেও নেমেছিল।

এক দিনের ব্যবধানে বাড়লেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহে শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে, মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ।

গত এক দিনে সারা দেশে মোট ২৪ হাজার ৯২৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯৮ লাখ ১৯ হাজার ৪১৮টি নমুনা।

এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ; মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৫৬৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের ৭১ শতাংশের বেশি।

ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা জেলায়ই শনাক্ত হয়েছে ৪৯৫ জন রোগী। দ্বিতীয় সর্বাধিক রোগী শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম জেলায় ২৫ জন।

যে ১৮ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৭ জন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের ৫ জন, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ১ জন করে এবং সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন ৩ জন।

মারা যাওয়াদের মধ্যে নারী সংখ্যা পুরুষের চেয়ে বেশি। ১৮ জনের মধ্যে ১০ জন নারী, ৮ জন পুরুষ।

গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ২ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।

তাদের মধ্যে ১৬ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ২ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

গত এক দিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছি ১৭ হাজার ২৮৩টি। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৪১ শতাংশ।

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে বিপর্যস্ত জুলাই-অগাস্ট পেরিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে সংক্রমণের গতি কমে আসে।

সাড়ে ৫ মাস পর গত ২১ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নামে। তারপর থেতে তা স্থিতিশীলই রয়েছে।

টানা দুই সপ্তাহ দৈনিক সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে মহামারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে ধরে নেন বিশেষজ্ঞরা। 

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। আর প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছিল তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ।

গত বছরের শেষ দিকটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ডেল্টা সংক্রমণের বিস্তারে এ বছরের এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে।

এর মধ্যে জুলাই, অগাস্ট ভয়াবহ অবস্থা পার করে বাংলাদেশ।

দেশে এই পরীক্ষা হয়েছে ৯৭ লাখ ৭৩ হাজার ২৪৪টি নমুনা। মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত রোগীর হার দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৯৩। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। গত ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৮ লাখ ৩ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২৩ কোটি ৪৯ লাখের বেশি রোগী।