কোভিড: সাত মাস পর শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে

দেশে ফেব্রুয়ারির পর প্রথমবারের মত দৈনিক নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত কোভিড রোগীর হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Oct 2021, 10:54 AM
Updated : 3 Oct 2021, 11:07 AM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সোয়া ২১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ৬১৭ জনের করোনভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাতে নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়াচ্ছে ২ দশমিক ৯০ শতাংশ।

এর আগে সর্বশেষ শনাক্তের হার তিনের নিচে ছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

দেশে সাড়ে ছয় মাস পর দৈনিক নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত কোভিড রোগীর হার গত ২১ সেপ্টেম্বর ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে। জুলাই মাসে তা ৩০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশে কোভিডে আক্রান্তদের মধ্যে গত এক দিনে আরও ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৫৭ হাজার ৯৬৪ জনে। তাদের মধ্যে ২৭ হাজার ৫৭৩ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে করোনাভাইরাস।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৫৮৯ নতুন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল, যা সাড়ে চার মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এক দিনে মৃত্যু হয়েছিল ২৪ জনের। সে হিসেবে গত এক দিনে মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।

গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৪০১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের দুই তৃতীয়ায়শ। যে ১৮ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ৭ জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের, আর ৭ জন চট্টগ্রাম বিভাগের।

সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন আরও ১ হাজার ১১২ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৭৫৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ২১ হাজার ২৪৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯৭ লাখ ৯৪ হাজার ৪৯০টি নমুনা।

এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ; মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ১৪ জন বাদে দুজন রাজশাহী বিভাগের এবং দুজন খুলনা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

তাদের মধ্যে ৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল। এছাড়া ১০ বছরের কম বয়সী একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

তাদের মধ্যে ১৫ জন সরকারি হাসপাতালে এবং ৩ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে নারী ও পুরুষের সংখ্যা সমান, ৯ জন করে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। গত ৩১ অগাস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১৪ সেপ্টেম্বর তা ২৭ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৭ লাখ ৯৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২৩ কোটি ৪৬ লাখের বেশি রোগী।