শিশুদের উপর কোভিডের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ‘ততটা নয়’

শিশুদের ক্ষেত্রে কোভিডের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবের যে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে, তা অমূলক বলে উড়িয়ে দিলেন যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Sept 2021, 08:05 PM
Updated : 2 Sept 2021, 08:14 AM

এই বিষয়ে বিশ্বের এই পর্যন্ত সবচেয়ে বড় পরিসরে গবেষণা চালিয়ে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষকরা বলছেন, শিশুদের নিয়ে যতটা ভয় সবাই করছে, আসলে ভয়ের কারণ ততটা নয়।

তারা উল্টো বলছেন, দীর্ঘ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না যেতে পেরে ঘরবন্দি থেকেই শিশুরা বরং বেশি মানসিক যাতনার শিকার হচ্ছে।

৫০ হাজারের বেশি শিশুকে নিয়ে চালানো এই গবেষণার ফল বুধবার বিবিসি প্রকাশ করেছে; যদিও এটি এখনও কোনো চিকিৎসা সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়নি।

ছবি: রয়টার্স

গত মার্চ থেকে ইংল্যান্ডের ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের উপর নিরীক্ষা চালিয়ে এই গবেষকরা দেখেছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ১৫ সপ্তাহ পর ২ থেকে ১৪ শতাংশের মধ্যে কিছু উপসর্গ দেখা গেছে।

এই উপসর্গের মধ্যে ছিল মাথাব্যথা, দুর্বল ভাব, শ্বাস নিতে সমস্যা। এজন্য তাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ নিতে হয়েছে।

কিন্তু এর বাইরে বিশাল সংখ্যকের কোনো সমস্যা নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হয়নি। কিংবা এমন কোনো সমস্যা হয়নি, যার জন্য তাদের স্কুল কামাই দিতে হত।

ওই শিশুদের ৫৩ শতাংশ যে কোনো একটি উপসর্গের কথা বলেছে। আর করোনাভাইরাস পজিটিভ- এমন শিশুদের ক্ষেত্রে এই হার ৬৫ শতাংশ দেখা গেছে।

গবেষক দল বলেছেন, ৩০ শতাংশের মধ্যে তিনটি উপসর্গের একাধিক দেখা গেলেও এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে এমন ১৬ শতাংশের মধ্যেও তা দেখা গেছে, যারা কখনও করোনাভাইরাসে আক্রান্তই হয়নি।

এই গবেষক দলে ছিলেন অধ্যাপক স্যার টেরেন্স স্টেফানসন, ডা. লিজ হুইটকারের মতো শীর্ষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

স্যার স্টেফানসন বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের অর্ধেক দীর্ঘস্থায়ী জটিলতায় পড়ছে, তা যে ভুল সে বিষয়ে তিনি এখন আশ্বস্ত।

“সবাই পরিস্থিতি যতটা খারাপ ভাবছে, আসল পরিস্থিতি তার ধারে কাছেও নয়,” বলেন তিনি।

গবেষকরা বলছেন, শিশুদের মানসিক যে সমস্যা হচ্ছে, এখন তার অবসানেই এখন বেশি জোর দেওয়া দরকার।

গবেষণায় অংশ নেওয়া ৪০ শতাংশ শিশু বলেছে, তারা এখন বিষণ্ণতায় ভুগছে, তারা অসুখী জীবন-যাপন করছে।

ছবি: রয়টার্স

গবেষকরা বলেন, এটা স্পষ্ট যে মহামারী শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

এর তিনটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। প্রথমটি হল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা; দ্বিতীয়টি হল, বন্ধুদের সঙ্গ না পাওয়া; তৃতীয় হল, ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগে থাকা।

“এটা (গবেষণা) সেই বিষয়টিই তুলে এনেছে যে এখন স্বাভাবিক জীবনে ফেরা এবং স্কুল খোলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ,” বলেন ডা. হুইটকার।