কোভিড: এক দিনে শনাক্ত ও মৃত্যু কমেছে

দেশে গত এক দিনে ১০ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে ২১৫ জনের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2021, 12:20 PM
Updated : 12 August 2021, 01:15 PM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ১০ হাজার ১২৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে।

এ নিয়ে দেশে মোট ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮৬৮ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হল; আর আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হল মোট ২৩ হাজার ৬১৩ জনের।

আগের দিন বুধবার সারা দেশে ১০ হাজার ৪২০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়, মৃত্যু হয় ২৩৭ জনের। সেই হিসেবে এক দিনের ব্যবধানে শনাক্ত রোগীর আর মৃত্যুর সংখ্যা দুটোই আরও কমেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশে। এই হার আগের দিন ২৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ ছিল।

গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৫ হাজার ৪ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে যা দিনের মোট শনাক্ত রোগীর অর্ধেক। আর এই সময়ে যে ২১৫ জন মারা গেছেন, তাদের ৬৫ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছেন আরও ৫৪ জন।

দেশের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ পশ্চিমের জেলাগুলোতে সংক্রমণ আর মৃত্যুর সংখ্যা গতমাসের চেয়ে অনেকটা কমে এসেছে। তবে দেশের মধ্য আর পূর্ব অংশে এখনও চলছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপট। 

সরকারি হিসেবে এক দিনে সেরে উঠেছেন ১৩ হাজার ৯৯০ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১২ লাখ ৬২ হাজার ৬৫ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে গত জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু হু করে বেড়ে ১৩ লাখ পেরিয়ে যায় গত ৪ অগাস্ট। এর মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে দিনে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১০ অগাস্ট তা ২৩ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট ২৬৪ জনের মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ।

বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৩ লাখ ২২ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২০ কোটি ৪৬ লাখের বেশি রোগী।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ৪৫ হাজার ৭৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৮৩ লাখ ১ হাজার ৫৪৯টি নমুনা।

নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ, এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬৯ শতাংশে।

 

গত এক দিনে ঢাকা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৪১৭ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিভাগের ফরিদপুরে ১৪৪ জন, গাজীপুরে ১৮৩ জন, গোপালগঞ্জে ১২৫ জন, কিশোরগঞ্জে ১১৮ জন, মানিকগঞ্জে ১৬৯ জন, মুন্সীগঞ্জে ১৯৭ জন, নারায়ণগঞ্জে ২২৪ জন, রাজবাড়ীতে ১৩২ জন এবং টাঙ্গাইলে ১১২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৫৮৯ জন, কক্সবাজারে ১৮৫ জন, ফেনীতে ১২৯ জন, নোয়াখালীতে ১৯৭ জন, লক্ষ্মীপুরে ৯৯ জন, চাঁদপুরে ১৭৪ জন, কুমিল্লায় ২৮২ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১১১ জন নতুন রোগী ধরা পড়েছে।

রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহী জেলায় ১১১ জন, নাটোরে ১০৪ জন, সিরাজগঞ্জে ১২০ জন; খুলনা বিভাগের মধ্যে যশোরে ১১২ জন, খুলনা জেলায় ১১৪ জন, কুষ্টিয়ায় ২৯২ জন এবং সিলেট বিভাগের সিলেট জেলায় ৩৫৯ জন ও মৌলভীবাজারে ১০০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

অন্য বিভাগগুলোর বিভিন্ন জেলার মধ্যে ময়মনসিংহে ৪৩৩ জন, রংপুরে ১৬৯ জন, বরিশালে ১২৬ জন এবং ভোলায় ১১৮ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

ঢাকা বিভাগে গত এক দিনে যে ৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৩৭ জনই ছিলেন ঢাকা জেলার। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা যাওয়া ৫৪ জনের মধ্যে ১১ জন কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা ছিলেন।

এছাড়া খুলনা বিভাগে ২৮ জন, সিলেট বিভাগে ২২ জন, রংপুর বিভাগে ১৬ জন, বরিশাল বিভাগে ১২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন এবং রাজশাহী বিভাগে ৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে গত এক দিনে।

মৃত ২১৫ জনের মধ্যে ১০৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৫৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১৯ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৯ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ২ জনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।

মৃতদের মধ্যে ১০৭ জন ছিল পুরুষ, ১০৮ জন নারী। ১৭৮ জন সরকারি হাসপাতালে, ৩৪ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ৩ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।