স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করে ১১ হাজার ৪৬৩ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
এ নিয়ে দেশে মোট ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ১৫৮ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হল; আর আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হল মোট ২২ হাজার ৮৯৭ জনের।
আগের দিন রোববার সারা দেশে ১০ হাজার ২৯৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়, মৃত্যু হয় ২৪১ জনের। সেই হিসেবে শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা এক দিনে বেড়েছে।
গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগেই ৬ হাজার ৯৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে যা দিনের মোট আক্রান্তের অর্ধেকের বেশি।
আর এই সময়ে যে ২৪৫ জন মারা গেছেন, তাদের ৮৩ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের। চট্টগ্রাম বিভাগে ৭১ জন এবং খুলনা বিভাগে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি হিসেবে এক দিনে সেরে উঠেছেন ১৪ হাজার ৪১২ জন । তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১২ লাখ ১৯ হাজার ৮৫৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সোমবার নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ২৮ শতাংশে। এই হার আগের দিন ২৪ দশমিক ৫২ শতাংশ ছিল।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে গত জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু হু করে বেড়ে ১৩ লাখ পেরিয়ে যায় গত ৪ অগাস্ট। এর মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে দিনে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৬ অগাস্ট তা ২২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগের দিন রেকর্ড ২৬৪ জনের মৃত্যুর খবর আসে।
বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪২ লাখ ৯৩ হাজার ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছে ২০ কোটি ২৬ লাখের বেশি রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ৪২ হাজার ২০৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৮১ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৭টি নমুনা।
নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় দৈনিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ২৮ শতাংশ, এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। আর এ পর্যন্ত মৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬৮ শতাংশে।
গত এক দিনে ঢাকা জেলায় দেশের সবচেয়ে বেশি ৪ হাজার ১৭৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিভাগের মুন্সীগঞ্জে ৪৫১ জন, ফরিদপুরে ১০৪ জন, গাজীপুরে ১৯৬ জন, মানিকগঞ্জে ১৬৬ জন, নারায়ণগঞ্জে ২৬৪ জন এবং শরীয়তপুরে ১৬৫ জন, নরসিংদীতে ১৩০ জন, রাজবাড়ীতে ১০৬ জন এবং টাঙ্গাইলে ১৫২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৫০৭ জন, কক্সবাজারে ১৬৮ জন, ফেনীতে ১০২ জন, নোয়াখালীতে ২৯২ জন, লক্ষ্মীপুরে ৯৭ জন, চাঁদপুরে ১৯৯ জন, কুমিল্লায় ৫৪৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০১ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়।
অন্য বিভাগগুলোর বিভিন্ন জেলার মধ্যে রাজশাহীতে ১৪৩ জন, সিরাজগঞ্জে ১৩৬ জন, ময়মনসিংহে ২০৮ জন, রংপুরে ১০২ জন, যাশোরে ১৪৩ জন, খুলনায় ১৯৬ জন, কুষ্টিয়ায় ১৪১ জন, ভোলায় ১৩৭ জন, সিলেটে ৪২৯ জন এবং মৌলভীবাজারে ১০৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
ঢাকা বিভাগে গত এক দিনে যে ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ৫২ জনই ছিলেন ঢাকা জেলার। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা যাওয়া ৭১ জনের মধ্যে ১৩ জন চট্টগ্রাম জেলার, ১৩ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার এবং ২৬ জন কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা ছিলেন।
এছাড়া খুলনা বিভাগে ২৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ১০ জন, বরিশাল বিভাগে ৬ জন, সিলেট বিভাগে ১৮ জন, রংপুর বিভাগে ১৯ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে গত এক দিনে।
মৃত ২৪৫ জনের মধ্যে ১৩৯ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৫৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২০ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৩ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ২ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ১২৮ জন ছিল পুরুষ, ১১৭ জন নারী। ১৮৫ জন সরকারি হাসপাতালে, ৪৯ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ১১ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।