মৃদু উপসর্গের কোভিড রোগীদের জন্য হোটেল ভাড়া করার ভাবনা

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের হাসপাতালে রাখা ‘ততটা জরুরি নয়’ তাদের চিকিৎসার জন্য হোটেল ভাড়া করার কথা ভাবছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2021, 03:58 PM
Updated : 3 August 2021, 03:58 PM

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এসব হোটেলে চিকিৎসক, নার্স, ওষুধপত্র সবই থাকবে। কিছু অক্সিজেনেরও ব্যবস্থা করা হবে।

কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও পরবর্তী করণীয় নিয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

দেশের কোভিড পরিস্থিতি তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “হাসপাতালের ৯০ শতাংশ সিটে রোগী ভর্তি আছে। আইসিইউগুলোতে ৯৫ শতাংশ রোগী রয়েছে। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করছি। কাজ চলছে। প্রথম দিকে ৫০০-৬০০ বেড দিতে পারব। পর্যায়ক্রমে এক হাজার বেডে নেওয়া যাবে।”

তবে সব রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন পড়ে না মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “সেসব রোগীর জন্য আলাদা হোটেল ভাড়া করার চিন্তা করেছি, সেখানে ওষুধপত্র, ডাক্তার-নার্স থাকবে। কিছু অক্সিজেনের ব্যবস্থা রাখব। কারণ হাসপাতালের আর জায়গা নেই। হাসপাতাল খালিও নেই। হোটেল খুঁজছি।”

সরকারের সব শেষ হিসাবে সোমবার মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৫ হাজার ৭৭৬ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে  ২৩৫ জনের।

তাতে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩ জন। তাদের মধ্যে ২১ হাজার ৩৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের ওই বৈঠকে সারা দেশে চলমান লকডাউনের বিধিনিষেধ ১০ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।

মোজাম্মেল হক পরে সাংবাদিকদের বলেন, আগামী এক সপ্তাহ ব্যাপকভিত্তিক টিকা দান কার্যক্রম পরিচালনার পর ১১ অগাস্ট থেকে দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিস খুলবে। সীমিত পরিসরে ‘রোটেশন করে’ যানবাহন চলবে।

তবে টিকা না নিয়ে কেউ কাজে যোগ দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ১১ অগাস্টের পর ১৮ বছরের বেশি বয়সী কেউ টিকা ছাড়া চলাচল করলে সেটি ‘শাস্তিযোগ্য অপরাধ’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

গ্রামে গ্রামে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কেউ বলতে পারবে না ভ্যাকসিন পাইনি। আইন না মানলে অধ্যাদেশ জারি করে হলেও শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা বিভিন্ন লেভেলে দেওয়া হতে পারে। যদি আবেদন-নিবেদনে কাজ না হয়। মাস্ক না পরলে, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে কঠোর অবস্থানে যাব।”

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ৭ অগাস্ট থেকে সাত দিনের জন্য দেশের প্রত্যেক ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে প্রায় এক কোটি টিকা দেবে সরকার। গ্রামে টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

“তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার এখন ৮০-৯০ শতাংশ। গ্রামের বয়স্করা বেশি মারা যাচ্ছেন। এজন্য টিকা গ্রামে নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের হাতে সোয়া কোটি টিকা আছে। এ মাসে আরও প্রায় এক কোটি টিকা এসে পৌঁছাবে। টিকার কর্মসূচি বজায় থাকবে। যাদের এনআইডি কার্ড নেই, তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেব।”

মানুষকে বিধিনিষেধ মানানোর জন্য পুলিশকে আরও ক্ষমতা দেওয়ার যে আলোচনা ছিল, তা এখনও অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “টিকার পাশাপাশি মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটাকে যদি সঠিকভাবে এনফোর্স করতে চাই, তাহলে পুলিশকে ক্ষমতা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে, যাতে কিনা তারা মাস্ক যারা পরবে না তাদের কিছুটা হলেও জরিমানা করতে পারে। এজন্য অধ্যাদেশ লাগবে। আলোচনা হয়েছে, হয়ত আমরা সেদিকেও যাব।”