অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় ৯৮ শতাংশের অ্যান্টিবডি: বিএসএমএমইউ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড টিকা গ্রহণকারীদের প্রায় সবার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার তথ্য এসেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2021, 12:52 PM
Updated : 2 August 2021, 12:52 PM

গবেষকরা বলছেন, টিকাগ্রহণকারীদের ৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন তারা। বাকি ২ শতাংশ আগে থেকেই ’ইমিউন কম্প্রমাইজড’ ছিলেন।

‘হেমাটোলজিক্যাল প্যারামিটার্স অ্যান্ড অ্যান্টিবডি টিটার আফটার ভ্যাকসিনেশন এগেইনস্ট সার্স-কোভ-২’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি সোমবার প্রকাশ করা হয়।

গবেষকদলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণকারী ২০৯ জনের ওপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ পুরুষ এবং অর্ধেকের বেশী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সাথে জড়িত। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩১ শতাংশের আগে কোভিড হয়েছিল।

গবেষণার মাধ্যমে কয়েকটি ইতিবাচক দিক উঠে আসার কথা জানিয়েছেন সহ-গবেষক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সালাহউদ্দীন শাহ।

তিনি বলেন, এ গবেষণার স্বেচ্ছাসেবীদের অর্ধেকের বেশি আগে থেকেই ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানিসহ অন্যান্য রোগে ভুগছিলেন।

“তবে এ ধরনের রোগের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিকা গ্রহণের পর অ্যান্টিবডি তৈরিতে কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়নি।”

অধ্যাপক সালাউদ্দীন বলেন, টিকা দেওয়ার পর রক্ত জমাট বাধা বা এরকম জটিল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা বিভিন্ন বিদেশি গবেষণায় উঠে এলেও সেরকম কোনো সমস্যা তারা এ গবেষণায় পাননি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৪২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী টিকাগ্রহণের পরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা বলেছেন, সকলের ক্ষেত্রেই উপসর্গ ছিল ‘মৃদু’ ।

যারা আগেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের শরীরে তুলনামূলক অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি পাওয়া গেছে বলে জানাচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষক দল।

তারা বলছেন, সময়ের সাথে অ্যান্টিবডির উপস্থিতির পরিবর্তন এবং পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচিতে নতুন অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য টিকার অ্যান্টিবডি তৈরির কার্যক্ষমতা পর্যালোচনার জন্য আরো গবেষণা প্রয়োজন।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে গবেষক দলে আরও ছিলেন উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন।

এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক, চিকিৎসক এবং কর্মচারীদের মধ্যে যারা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন, তাদের ৯৩ শতাংশের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার কথা জানিয়েছেন গবেষকরা।

টিকা নেওয়া ৩০৮ জনের ওপর গবেষণা চালিয়ে গত জুনে ওই ফলাফল প্রকাশ করেছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ড দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে দেশে গণটিকাদান শুরু হয়। এ পর্যন্ত যারা টিকা পেয়েছেন, তাদের একটি বড় অংশই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়েছেন।

এখন চীনা কোম্পানি সিনোফার্ম এবং কোভ্যাক্স থেকে পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি ফাইজার ও মডার্নার টিকাও দেওয়া হচ্ছে।