এক সপ্তাহ পর টিকার বড় চালান আসছে: স্বাস্থ্যের ডিজি

করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে ভুগতে থাকার মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এক সপ্তাহের মধ্যে টিকার ‘বড় চালান’ আসার খবর দিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2021, 12:14 PM
Updated : 28 June 2021, 12:22 PM

আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সোমবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, “আমি আপনাদের একটি সুসংবাদ দিতে চাই যে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আমরা বড় অ্যামাউন্টের ভ্যাকসিন পেতে যাচ্ছি।”

তবে কোন দেশ থেকে বা কোন টিকা আসছে, কী পরিমাণ আসছে, সে বিষয়ে কিছুই বলেননি তিনি।

কোভিড-১৯ মহামারীর বছর গড়ানোর পর টিকা এলে বাংলাদেশ গত ফেব্রুয়ারিতে গণটিকাদান শুরু করলেও তা গতি হারায় ভারত টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার সাড়ে ৩ কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি করলেও ৭০ লাখ ডোজের পর আর আসেনি।

এরপর বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে টিকা কেনার প্রক্রিয়া শুরু করলেও তা এখনও আসেনি। তবে চীনের উপহার হিসেবে সিনোফার্মের কিছু টিকা এসেছে।

এছাড়া টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে বিনামূল্যে পাওয়া ফাইজার-বায়োএনটেকের এক লাখ ৬২০ ডোজ টিকা আসে গত ৩১ মে।

এরপর কোভ্যাক্স থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার তৈরি ২৫ লাখ ডোজ টিকা অচিরেই আসছে বলে সম্প্রতি জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খুরশীদ আলম বিস্তারিত না বললেও তার কথা অনুযায়ী এটাই সেই চালান হতে পারে। এই ২৫ লাখ ডোজ দিয়ে ১২ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে।

নতুন টিকা কাদের দেওয়া হবে, তা জানিয়েছেন খুরশীদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যেসব মানুষ রেমিটেন্স সংগ্রামে বিদেশ যাচ্ছেন, তাদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এরপর দেওয়া হবে তাদের, যারা জটিল রোগের কারণে উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

জটিল রোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “যেসব লোকের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার আছে বা অন্য কোনো রোগের জন্য ওষুধ খান, যেটার জন্য তার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে, সেই সমস্ত রোগীরা যখন কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার বাড়ছে।”

টিকাদানে স্বাস্থ্য সেবা খাতের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বেড়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিদিন অন্তত এক কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে।”

ঢাকার আগারগাঁওয়ে ‘রিপোর্ট অন বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২০’ জরিপের তথ্য প্রকাশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন খুরশীদ।

টিকার ‘পলিটিক্স’

বাংলাদেশের টিকা না পাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খুরশীদ বলেন, “বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন নিয়ে একটি বড় পলিটিক্স চলছে। আমরাও সেই পলিটিক্সের শিকার।”

গত বছর চীনের একটি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হওয়ার কথা থাকলেও সরকার শেষমেষ তা অনুমোদন দেয়নি। যা হলে ওই টিকাটি সহজে পাওয়ার সুযোগ তৈরি হত।

সরকারের সিদ্ধান্ত না নেওয়ার বিষয়ে খুরশীদ বলেন, “তখন অনেকে বলেছিল এখানে ট্রায়াল করার জন্য। কিন্তু উনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) হতে দেননি। উনি বলেছিলেন যে বাংলাদেশের মানুষকে আমি গিনিপিগ হতে দেব না।”

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, একটা ভ্যাকসিন তৈরি হতে ৭ থেকে ৮ বছর সময় লাগে, সেখানে এত দ্রুত একটি ভ্যাকসিন তৈরী হচ্ছে, সেটার অনেক সাইড ইফেক্ট থাকতে পারে। ওরা ভ্যাকসিন তৈরি করুক, এরপর ওদের দেশে ট্রায়াল করুক, তারপরে তারা ঘোষণা দিক যে এটা সেইফ। এরপর আমরা এটা কিনে নেব।”

তবে সম্প্রতি চীনের নতুন একটি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল-বিএমআরসি।