‘দূষণে ব্যবহারের অনুপযোগী’ জনসনের ৬ কোটি ডোজ টিকা

জনসন অ্যান্ড জনসনের ছয় কোটি ডোজ টিকা ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে ওষুধ কোম্পানিটিকে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 June 2021, 05:55 AM
Updated : 12 June 2021, 06:00 AM

সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, জনসনের ‘সংকট-কবলিত’ বাল্টিমোর কারখানায় উৎপাদিত ওই ছয় কোটি ডোজ ব্যবহার করা যাচ্ছে না সম্ভাব্য দূষণের কারণে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে বা অন্যান্য দেশে এসব টিকার এক কোটি ডোজ বিতরণের পরিকল্পনা করছে এফডিএ।

এমারজেন্ট বায়োসলিউশনস ঠিকঠাকমত কারখানাটিতে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করেছিল কিনা সে বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার উদ্বেগের কারণে দুই মাস ধরে বন্ধ কারখানাটি এমারজেন্ট আবার চালু করতে পারবে কিনা তা নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে জনসন অ্যান্ড জনসনের যে টিকা প্রয়োগ করা হয়েছে তা ওষুধ কোম্পানিটির নেদারল্যান্ডসের কারখানায় উৎপাদিত, যেটা এমারজেন্ট পরিচালনা করছে না।

সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে এফডিএ সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করেছে আটকে থাকা কমপক্ষে ১৭ কোটি ডোজ টিকা নিয়ে তারা কী করবে। বাল্টিমোরের কারখানায় বড় ধরনের উৎপাদন ত্রুটি ধরা পড়ার পর দুটি টিকার এই বিপুল চালানের মান নিয়ে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

এমারজেন্ট পরিচালিত বাল্টিমোরের কারখানায় জনসন অ্যান্ড জনসনের ১০ কোটির বেশি এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার কমপক্ষে ৭ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদন করা হয়। এ বছরের মার্চে এমারজেন্ট সনাক্ত করে যে এর কারখানার কর্মীরা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রস্তুতে ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার একটি ব্যাচের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কর্মকর্তারা এ খবর জানার পর কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদনে এমারজেন্টের অনুমতি বাতিল করেন এবং জনসন অ্যান্ড জনসনকে নির্দেশ দেন ওই কারখানায় তাদের টিকার উৎপাদন কার্যক্রম সরাসরি তত্ত্বাবধানের জন্য।

শুরুর দিকে জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকাকে টিকাদান কর্মসূচিতে একটি পরিবর্তন ঘটানো টিকা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিলো যেহেতু এর একটি মাত্র ডোজ প্রয়োগ করতে হয় এবং ঝুঁকিতে থাকা সম্প্রদায়ের জন্য এটা বিশেষভাবে উপযোগী।

কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে পর্যাপ্ত পরিমানে ফাইজার ও মডার্নার টিকার মজুদ আছে। এখন আর তাদের জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার খুব বেশি চাহিদা নেই।

বাইডেন প্রশাসন এখন অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকাগুলো অন্য দেশে বিতরণ করে দেওয়ার পরিকল্পনা বিবেচনা করছে কিন্তু এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দেরী হবে যেহেতু এফডিএ এখনও বাল্টিমোরের কারখানার ঘটনার মূল্যায়ন শেষ করেনি।

এক বিবৃতিতে এফডিএ জানিয়েছে, মজুদ থাকা এসব চালানের ১০ লাখ ডোজ ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে টিকা উৎপাদন কারখানার নথিপত্র ও উৎপাদকের মান যাচাই পরীক্ষার ফলাফলের ওপর একটি বিস্তারিত মূল্যায়ন সম্পন্ন করবে। পাশপাশি বিদ্যমান জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেছে তারা।

এফডিএর সিদ্ধান্তের বিষয়ে জনসন অ্যান্ড জনসন এবং এমারজেন্টের প্রতিনিধিরা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।