করোনাভাইরাস সংক্রমণ: সীমান্তে কড়াকড়ি চায় জাতীয় কমিটি

ভারতে করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় দেশটির সঙ্গে যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি বলে জানিয়েছেন কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2021, 03:41 PM
Updated : 24 April 2021, 06:32 PM

শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে খুব বেশি যাতায়াত হলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অবশ্যই থাকে।

“আমরা বর্ডারে কড়াকড়ি করতে বলছি। আসা-যাওয়া সীমিত করতে হবে। এর মানে একেবারে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ভ্রমণ করবেন না। কোনোরকম পর্যটন, বিনোদন বা সাধারণ কারণে যাতায়াত বন্ধ করা যেতে পারে।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতের অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। অক্সিজেনের অভাবে অনেক হাসপাতাল থেকে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর খবর আসছে।

দেশটিতে করোনাভাইরাসের নতুন একাধিক ধরনও শনাক্ত হয়েছে। এমনকি ‘দুইবার রূপ পরিবর্তন করা’ধরনও পাওয়া গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানায় বিবিসি।

এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ ও সীমিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে অধ্যাপক সহিদুল্লাহ বলেন, “ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, সীমিত করতে না পারি এবং কোয়ারেন্টিন করতে না পারি তাহলে এটা তো ছড়িয়ে পড়বেই।

“যদি বর্ডার পুরো বন্ধ না করা যায় তাহলে যারা ভারত থেকে আসবে তাদের বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে। এটার বিকল্প কিছু নেই,” বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে জাতীয় কমিটির সদস্যরা এর মধ্যে কথা বলেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “বিষয়টি সরকারকে জানানো হবে। আমরা এখনও সুপারিশ করিনি। তবে করবো। সদস্যদের মিটিংয়ে এটা আলোচনা হয়েছে।”

তবে এই মুহূর্তে সীমান্ত বন্ধের প্রয়োজন নেই বলে মনে করছেন আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন। এক্ষেত্রে ভ্রমণকারীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি বলেন, “যারা আসছেন তাদেরকে অবশ্যই ৭২ ঘণ্টা আগে নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। করোনাভাইরাস নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়ে আসতে হবে। সম্ভব হলে সবাইকে প্রাতিষ্ঠানিক, তা না হলে কঠোরভাবে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।”

আইইডিসিআরের সাবেক এই প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার মতে, ভারতে করোনাভাইরাসের যে ধরন ছড়িয়ে পড়েছে তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। এটা ক্ষতিকর কিনা তা এখনও প্রমাণিত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এটা নিয়ে গবেষণা হবে।“

শনিবার ভারতে রেকর্ড তিন লাখ ৪৬ হাজার ৭৮৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে টানা তৃতীয় দিন তিন লাখের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছে দেশটির সরকার।

শনাক্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে রেকর্ড দুই হাজার ৬২৪ জন রোগী মারা গেছেন বলে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এ নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ জনসংখ্যার এই দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৮৯ হাজার ৫৪৪ জনে পৌঁছেছে।

দেশটির অনেক রাজ্যের হাসপাতালে রোগী উপচে পড়ছে; খালি নেই কোনো শয্যা। অনেক হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ শেষ হয়ে যাওয়ার খবর আসছে।

অক্সিজেন চেয়ে হাসপাতাল থেকে জরুরি বার্তা (এসওএস) দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে।