করোনাভাইরাস: প্রথম ডোজ পাওয়া ২৯ শতাংশের টিকার ‘কোর্স’ পূরণ

সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের মধ্যেই এক দিনে ১ লাখ ৭০ হাজার ৯০২ জন করোনাভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2021, 04:01 PM
Updated : 20 April 2021, 04:42 PM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট ১৬ লাখ ৭৮ হাজার ১৮৯ জনকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে, যা প্রথম ডোজ পাওয়া নাগরিকের সংখ্যার ২৯ শতাংশের সামান্য বেশি। এ পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন মোট ৫৭ লাখ ৪৫ হাজার ৮৫ জন।

গত ৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ডোজের পাশাপাশি টিকার প্রথম ডোজও দেওয়া হচ্ছে; তবে সে সংখ্যা কিছুটা কমেছে। মঙ্গলবার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১৫ হাজার ৯৩৮ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, দুই ডোজ মিলিয়ে এ পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়েছে মোট ৭৪ লাখ ২৩ হাজার ২৭৪ ডোজ। আর মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৭১ লাখ ৫০ হাজার ৮৭৩ জন।

বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ড। এই টিকার দুটি ডোজ নিতে হয়।

প্রথম কয়েকদিন পরীক্ষামূলক দেওয়ার পর দেশজুড়ে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া শুরু হয় ফেব্রুয়ারিতে। দুই মাস পর ৮ এপ্রিল শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ।

করোনাভাইরাসের টিকা দিতে প্রথম দিকে অনেকের মধ্যে আগ্রহ কম ছিল। ব্যাপক প্রচারের পর টিকা নিতে আগ্রহীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

সোমবার চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সাইয়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) একদল গবেষক দাবি করেন, টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর কেউ কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও তাদের মধ্যে সংক্রমণের তীব্রতা কম ছিল বলে তারা গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন।

সিভাসুর উপাচার্য অধ্যাপক গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে সাত সদস্যের গবেষক দল গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রামে প্রথম ডোজের টিকাগ্রহীতাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে এ গবেষণা চালান।

দেশে কোভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হল বৃহস্পতিবার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার টিকা দেওয়ার প্রস্তুতিতে এক স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি

গবেষকরা বলছেন, শনাক্ত হওয়াদের মধ্যে ২০০ জন গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে করোনাভাইরাসের উল্লেখযোগ্য উপসর্গ শ্বাসকষ্ট তেমন ছিল না।

তবে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক ভিত্তিতে গবেষণা না হলে এ বিষয়ে সামগ্রিক চিত্র ফুটে উঠবে না বলেও তারা মনে করেন।

এ গবেষণায় ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সিভাসু ল্যাবে পরীক্ষা করা ছয় হাজার ১৪৬ জনের নমুনার মধ্যে কোভিড-১৯ শনাক্ত হওয়া এক হাজার ৭৫২ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা মহানগরের ৪৭টি টিকাদান কেন্দ্রে মঙ্গলবার ২৬ হাজার ২০ জন দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। এদিন প্রথম ডোজ নিয়েছেন ২ হাজার ৭৫২ জন।

বিভাগভিত্তিক হিসাবে সবচেয়ে বেশি ৫৫ হাজার ৪৫২ জন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন ঢাকায়। এদিন প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫ হাজার ২৪৯ জন।

এছাড়া ময়মনসিংহে ৭ হাজার ৭৬ জন, চট্টগ্রামে ৩৯ হাজার ৪৭৭ জন, রাজশাহীতে ১৭ হাজার ৫১ জন,রংপুরে ১৪ হাজার ৮৮ জন, খুলনায় ২০ হাজার ৬১১ জন, বরিশালে ৮ হাজার ৮০ জন এবং সিলেট বিভাগে ৯ হাজার ৮৭ জন করোনাভাইরাসের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন।