করোনাভাইরাস: এক দিনে রেকর্ড রোগী শনাক্ত, আক্রান্ত ছাড়াল ৬ লাখ

দেশে এক দিনে রেকর্ড সংখ্যক মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে গেল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2021, 09:42 AM
Updated : 29 March 2021, 11:49 AM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫ হাজার ১৮১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ৪৫ জনের।

এক দিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা দেশে মহামারী শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। এর আগে গত বছরের ২ জুলাই মোট ৪ হাজার ১৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, এতদিন সেটাই ছিল এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত।

আর গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাভাইরাসের মৃত্যুর ওই সংখ্যা গত সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। 

এর আগে গতবছর ২৮ অগাস্ট এর চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল। সেদিন ৪৭ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার বেড়ে ১৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ হয়েছে, যা ২৪ অগাস্টের পর সবচেয়ে বেশি।

নতুন শনাক্ত ৫ হাজার ১৮১ জনকে নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ৮৯৫ জনে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৪৫ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৮ হাজার ৯৪৯ জনের মৃত্যু হল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ৭৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৮ জন হয়েছে।

বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ২০ ডিসেম্বর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছিল, তা সাড়ে ৫ লাখে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল ৭৭ দিন। এরপর আরও ৫০ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হল মাত্র ২২ দিনে।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মার্চ তা সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৭২ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ লাখ ৮৪ হাজার।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩ তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪০তম অবস্থানে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৪টি ল্যাবে ২৮ হাজার ১৯৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৬ লাখ ১৭ হাজার ২৫টি নমুনা।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৫ লাখ ৫৪৮টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১১ লাখ ১৬ হাজার ৪৭৭টি।

 

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ আর নারী ১৫ জন। তাদের মধ্যে ৪৪ জন হাসপাতালে ও ১ জন বাড়িতে মারা গেছেন।

তাদের মধ্যে ২৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরে মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

মৃতদের মধ্যে ২৮ জন ঢাকা বিভাগের, ৬ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৫ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩ জন খুলনা বিভাগের এবং ১ জন করে মোট ৩ জন বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৯৪৯ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৭৪৬ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ২০৩ জন নারী।

তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ২ হাজার ২১৯ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ হাজার ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪৪২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৫ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৭ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৭ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

মৃতদের মধ্যে ৫ হাজার ৮১ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৬২৮ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৯৯ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৭৭ জন খুলনা বিভাগের, ২৭৩ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১৭ জন সিলেট বিভাগের, ৩৭৩ জন রংপুর বিভাগের এবং ২০১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।