কোভিড-১৯: বছরের শেষ দিন এল ২৮ মৃত্যুর খবর

করোনাভাইরাসের মহামারীতে দুর্বিষহ হয়ে ওঠা ২০২০ সালের শেষ দিন এল আরও ২৮ জনের মৃত্যু আর ১ হাজার ১৪ জন নতুন রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2020, 10:07 AM
Updated : 31 Dec 2020, 11:02 AM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত শনাক্ত ১ হাজার ১৪ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৫১০ জন হয়েছে।

আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ২৮ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ৫৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৩৮৯ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৪ লাখ ৫৭ হাজার ৪৫৯ জন হয়েছে।

গতবছর ডিসেম্বরের শেষে চীনের উহানে নতুন ধরনের এক নিউমোনিয়া ধরা পড়ে, যাদের কারণ হিসেবে নতুন এক করোনাভাইরাসকে চিহ্নিত করা হয়। ২০২০ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝি থাইল্যান্ডে নতুন ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হয়।

শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়ে এ ভাইরাস ১ লাখের বেশি মানুষকে আক্রান্ত এবং চার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটানোর পর মার্চের ১১ তারিখ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ সঙ্কটকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে।

ততদিনে নতুন এ করোনাভাইরাস বাংলাদেশেও পৌঁছে গেছে; ৮ মার্চ প্রথম তিনজনের শরীরে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর।

শনাক্ত রোগীর সেই সংখ্যা ৫ লাখ পেরিয়ে যায় ২০ ডিসেম্বর। এর মধ্যে গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ ডিসেম্বর তা সাড়ে সাত হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৮ কোটি ২৭ লাখ পেরিয়েছে; মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৮ লাখ ৬ হাজারের ঘরে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৭তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৪টি আরটি-পিসিআর ল্যাব, ২৬টি জিন-এক্সপার্ট ল্যাব ও ৪০টি র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে, অর্থাৎ মোট ১৮০টি ল্যাবে ১৩ হাজার ২৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৩২ লাখ ২৭ হাজার ৫৯৮টি নমুনা।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৫ লাখ ৫৭ হাজার ৯৩১টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৬৬৭টি।

 

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২১ জন পুরুষ আর নারী ৭ জন। তাদের মধ্যে ২৬ জন হাসপাতালে এবং দুইজন বাড়িতে মারা গেছেন।

তাদের মধ্যে ১৮ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।

মৃতদের মধ্যে ২২ জন ঢাকা বিভাগের, ৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের এবং ১ জন করে মোট তিনজন বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৭ হাজার ৫৫৯ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৭৫৪ জনই পুরুষ এবং ১ হাজার ৮০৫ জন নারী।

তাদের মধ্যে ৪ হাজার ১২৬ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়াও ১ হাজার ৯১৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৮৮৮ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩৭৮ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৫৯ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৫৭ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৫ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

এর মধ্যে ৪ হাজার ১৫১ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৪১০ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৪৩৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৩০ জন খুলনা বিভাগের, ২৩৮ জন বরিশাল বিভাগের, ২৯১ জন সিলেট বিভাগের, ৩৩৯ জন রংপুর বিভাগের এবং ১৬৭ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।