তবে যাদের মাধ্যমে এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছিল, তারা বলেছে, ট্রায়াল চলাকালে স্বেচ্ছাসেবীদের একজনের মৃত্যু হলেও তা ভ্যাকসিনের কারণে ঘটেনি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৯ অক্টোবর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ‘পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া’ দেখা দেওয়ার ওই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ব্রাজিলের স্বাস্থ্য খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা অ্যানাভিস।
তবে সেটা ব্রাজিলে না ব্রাজিলের বাইরে ঘটেছে, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল কতদিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে- সেসব বিষয় তারা স্পষ্ট করেনি।
সিনোভ্যাকের এই টিকা বর্তমানে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের একেবারে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ব্রাজিলে এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছিল সাও পাওলোর মেডিকেল রিসার্চ ইন্সটিটিউট বুটানটানের মাধ্যমে।
বুটানটানের প্রধান দিমাস কোভাস বলেছেন, একজনের মৃত্যুর পর টিকার ট্রায়াল স্থগিত করার ওই সিদ্ধান্ত হয়। তবে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর সঙ্গে টিকার কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি, ফলে অ্যানাভিসের সিদ্ধান্ত ‘অদ্ভূত’ মনে হয়েছে তার কাছে।
স্থানীয় একটি টেলিভিশনকে তিনি বলেছেন, “১০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী এ ট্রায়ালে অংশ নিচ্ছেন। তাদের কারও মৃত্যু হতেই পারে। তবে ওই মৃত্যুর সঙ্গে ভ্যাকসিনের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি, যাতে এরকম সময়ে এসে ট্রায়াল স্থগিত করতে হবে।”
এ বিষয়ে বুটানটানের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বিশ্বে গত একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় মহামারী ডেকে এনেছে নতুন করোনাভাইরাস। এতে সাড়ে ১২ লাখের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে মারা গেছে, আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫ কোটি।
এই রোগের কোনো ওষুধ এখনও আবিষ্কৃত না হওয়ায় টিকার গবেষণার দিকেই তাকিয়ে আছে বিশ্ববাসী।
রাশিয়া ও চীন ইতোমধ্যে টিকা তৈরি করে তার প্রয়োগও শুরু করেছে। আরও কয়েকটি দেশের টিকাও রয়েছে চূড়ান্ত পর্যায়ে। তবে এর কোনোটি এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি।
চীনের সিনোভ্যাক বায়োটেক লিমিটেডের ওই টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বাংলাদেশেও হওয়ার কথা ছিল। তবে অর্থায়ন জটিলতায় শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আটকে যায়।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো শুরু থেকেই চীনের এ ভ্যাকসিনের বিরোধিতা করে আসছিলেন। এ টিকা তার সরকার কিনবে না বলেও এর আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
কোনো টিকার গবেষণা পর্যায়ে কোনো স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ হয়ে পড়লে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল স্থগিত রাখা একটি সাধারণ বিষয়।
এর আগেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটা ঘটেছে। সেই অসুস্থতা বা মৃত্যুর সঙ্গে টিকার কোনো সম্পর্ক না থাকলে ট্রায়াল আবার শুরুও হয়েছে।
চীনের একজন কর্মকর্তা গত ২০ অক্টোবর বলেছিলেন, সিনোভ্যাকের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে মারাত্মক কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তারা দেখেননি।
ব্রাজিলের পাশাপাশি তুরস্ক ও ইন্দোনেশিয়াতেও সিনোভ্যাকের টিকার শেষ পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে।