বিধি প্রয়োগ ছাড়া লকডাউন শিথিলে সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা

করোনাভাইরাস অতি সংক্রামক হওয়ায় এই রোগ প্রতিরোধের বিধি-বিধান যথাযথভাবে প্রয়োগ ছাড়া লকডাউন শিথিল করা হলে রোগ সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 May 2020, 06:32 PM
Updated : 28 May 2020, 07:21 PM

বৈশ্বিক এই মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে বাংলাদেশে দুই মাসের লকডাউন তুলে অফিস-আদালত ও গণপরিবহন চালুর ঘোষণা দেওয়ার পর এই সতর্ক বার্তা এলো।

বৃহস্পতিবার কোভিড-১৯ মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় কারিগরি কমিটির বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতায় এই যে, রোগ সংক্রমণের হার সুনির্দিষ্টভাবে না কমার আগে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চালু করলে রোগের হার বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

“সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রযোজ্য বিধি-বিধান সঠিক পদ্ধতিতে প্রয়োগ না করে শিথিল করা হলে রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করতে পারে।”

সভায় কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার গাইডলাইনে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন না রাখার পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কারিগরি কমিটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সুনির্দিষ্টভাবে কোভিড-১৯ রোগে হাইড্রোক্সি-ক্লোরোকুইন নামক ঔষধ ব্যবহারের ঝুঁকি সম্বন্ধে নির্দেশনা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নে এ ঔষধের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।”

এছাড়া আইভারমেকটিন, কনাভালোসেন্ট প্লাজমা এবং অন্যান্য ওষুধ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বাইরে ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি। একইভাবে এসব ওষুধ ব্যবহার না করতে সাধারণ মানুষকেও পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় কমিটি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ ও অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসা একই হাসপাতালে করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাকে সঠিক মনে করে কমিটি।

“তবে এ ব্যাপারে প্রশাসনিক, সাংগঠনিক, জনবল ও সরঞ্জামের বিশেষ প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে।”

হাঁচি-কাশি ও সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় করোনাভাইরাস। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এরপর ধীরে ধীরে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও ঈদ সামনে রেখে সপ্তাহ দুয়েক আগে বিপণিবিতান ও দোকানপাট সীমিত আকারে খোলাসহ বিধি-নিষেধ কিছুটা শিথিল করার পর রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়েছে।

এখন পর্যন্ত সারা দেশে ৪০ হাজার ৩২১ জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এই রোগে মারা গেছে ৫৫৯ জন।

রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ার মধ্যেই আগামী ৩১ মে থেকে সাধারণ ছুটি আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। খুলে দেওয়া হচ্ছে অফিস আদালত। সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালুরও সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।