তিনি বলেছেন, “একদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত নীতি, অর্থায়ন ও গবেষক-উদ্ভাবকদের কাজের স্বীকৃতি প্রদানের ব্যবস্থা করা জরুরি।
“অপরদিকে শিল্পগুলোকেও গবেষণা ও গবেষকদের উদ্ভাবন কার্যক্রমে নিজেদের স্বার্থে এবং দেশের স্বার্থে যুক্ত হওয়ার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার সকাল ১১টায় টিএসসির মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এ বছর ‘গবেষণা ও উদ্ভাবন: ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা’ প্রতিপাদ্যে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
“বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন অঙ্গনে খুবই উদ্যোগী এবং সোচ্চার। বিভিন্ন ক্ষেত্রে মতামত সৃষ্টিতে নাগরিক সমাজ বিশেষ ভূমিকা রাখে।
“একাডেমিয়া, শিল্প ও সরকারকে গবেষণা ও নতুন দ্রব্যাদি ও প্রক্রিয়াকরণের পদ্ধতি উদ্ভাবনে ট্রিপল হেলিক্সের অংশীদের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে আরও উদ্যোগী হতে উদ্বুদ্ধ করা এবং অবস্থা বিবেচনায় চাপ সৃষ্টি করতে নাগরিক সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”
বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতার বলয় তৈরি করতে খলীকুজ্জমান বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে তা অনুসরণের পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, “ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতায় যেহেতু বাংলাদেশে কোনো অভিজ্ঞতা নেই, তাই এ দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও মালয়েশিয়ার মতো সরকারি উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে। ওই সকল দেশে গৃহীত ব্যবস্থার আলোকে বাংলাদেশের বাস্তবতাভিত্তিক যথাযথ নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন করতে পারে সরকার।”
ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের স্বাধীনতা সংগ্রামসহ বাঙালির প্রতিটি গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে সূতিকাগারের মতো ভূমিকা রাখলেও দীর্ঘদিন থেকে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শতবর্ষী এ বিদ্যাপীঠের।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোতে পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে এবং কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অ্যালামনাইদের অংশগ্রহণে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
পরে টিএসসিতে আলোচনা সভায় উপাচার্য গবেষণা ও উদ্ভাবনে ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন।
“ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া সহযোগিতা বৃদ্ধিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রায়োগিক জ্ঞান বৃদ্ধি ও স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম চালু করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) উপস্থিত ছিলেন।