সিলেট ও সুনামগঞ্জকে ‘জাতীয় দুর্যোগপূর্ণ’ এলাকা ঘোষণার দাবি

ভয়াবহ বন্যায় নিজেদের পরিবারের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে সিলেট ও সুনামগঞ্জকে `জাতীয় দুর্যোগপূর্ণ’ এলাকা ঘোষণা এবং দ্রুত ত্রাণ সহায়তা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিলেট বিভাগের একদল শিক্ষার্থী।  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2022, 12:11 PM
Updated : 17 June 2022, 12:11 PM

শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে জালালাবাদ ছাত্রকল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে তারা এ দাবি জানান।

সমিতির সভাপতি মো. শাহরিয়ার বলেন, “সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। আমাদের বাড়িঘর, আমাদের যে আত্মীয় স্বজন আছেন, তারা খুবই নাজুক অবস্থার মধ্যে আছেন। বিদ্যুত ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে আমরা পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।

“আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি, কিন্তু আমাদের মনটা পড়ে রয়েছে আমাদের বাড়িতে। আমাদের বাড়ির কী অবস্থা, তা আমরা জানতে পারছি না।”

ভারতের মেঘালয়-আসামে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পানিতে চলতি মওসুমের তৃতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে সিলেট অঞ্চলে।

সুনামগঞ্জের শহরে এখন একতলা কোনো বাড়িতে পানি উঠতে বাকি নেই। সদরের পাশাপাশি দোয়ারাবাজার, ছাতক, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জ ও জগন্নাথপুর উপজেলা ভাসছে বন্যায়।

পানি ঢুকেছে সিলেট শহরেও। জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও সদর উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা এখন পানির নিচে।

এ অবস্থায় বন্যাদুর্গত সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় উদ্ধার ও ত্রাণকাজে সেনা সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন।

মানববন্ধনে জালালাবাদ ছাত্রকল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে শাহরিয়ার বলেন, “সিলেট ও সুনামগঞ্জকে ‘জাতীয় দুর্যোগপূর্ণ’ এলাকা ঘোষণা করতে হবে। সরকারি উদ্যোগে দ্রুত যথাযথ ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাতে হবে।

সুরমা, কুশিয়ারা, মনু নদীসহ হাওড় এলাকাকে দুযোর্গ মোকাবেলায় উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।

“নদী তীরবর্তী এলাকারগুলোকে উপযুক্ত বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, আশ্রয়ন প্রকল্প অত্যন্ত স্বল্প। পর্যাপ্ত আশ্রয়ন প্রকল্প গড়ে তুলতে হবে। বন্যায় যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, তাদেরকে সরকারিভাবে অনুদান প্রদান করা হোক এবং তাদের ক্ষয়ক্ষতিগুলো পূরণ করা হোক।”

ইতিহাস বিভাগের রিয়াজ উদ্দিন বলেন, “আমরা এমন একটা অবস্থায় আছি, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। আমাদের ছোট ভাইবোন কেমন আছে, সেই খবরটুকু জানি না। সুনামগঞ্জে যে ঘন ঘন বন্যা হচ্ছে, সেই বন্যার কারণ নির্ণয় করতে হবে।”

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন বলেন, সরকার যে ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়ন করেছে, সেখানে সরকার মাত্র ৬টা প্রকল্প হাওড় অঞ্চলে দিয়েছে। সেই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে মাত্র বিশ হাজার কোটি টাকা। আমি বলব, সিলেটে বার বার বন্যা হচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সেটা অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।”