সব অর্থ ঢাবিতে দান করা অধ্যাপক শফি আর নেই

সঞ্চিত সব অর্থ নিজ বিভাগে দান করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ শফি মারা গেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 April 2022, 01:54 PM
Updated : 26 April 2022, 01:54 PM

ঢাকার একটি হাসপাতালে সোমবার রাত সোয়া ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে জানান মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক  মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, স্যার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত রাত সোয়া ১২ টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মঙ্গলবার বাদ জোহর অধ্যাপক শফিকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক মনিরুল।

অধ্যাপক শফির বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। ছেলেরা দেশের বাইরে থাকেন।

অধ্যাপক শফির হাত ধরেই ১৯৯৮ সালে যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি অবসরে যান ২০০৫ সালে।

দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে কখনেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির সঙ্গে নিজেকে জড়াননি অধ্যাপক মোহাম্মদ শফি। বিভাগের উন্নয়ন, গবেষণা, প্রকল্প আর ক্লাস নিয়েই কেটেছে তার সময়। পাঁচটি গবেষণাগ্রন্থ, একটি আত্মজীবনী এবং ৭০টির মতো তার প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে।

শুরুর দিকে মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের ক্লাস নেওয়া হত প্রাণিবিদ্যা আর অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের শ্রেণিকক্ষে। নিজস্ব ভবন করতে ২০০০ সালে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। সে টাকায় পাঁচতলার ভিতসহ একতলা পর্যন্ত হয়ে তা থেমে যায়। অর্থাভাবে প্রায় ১৫ বছর আটকে ছিল নিজস্ব ভবনের নির্মাণকাজ।

পরে অধ্যাপক শফি তার সারা জীবনের সঞ্চয়ের প্রায় ৭০ লাখ টাকা দান করেন বিভাগের ভবন নির্মাণে।

অধ্যাপক শফির মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শোক প্রকাশ করেছেন।

শোক বাণীতে উপাচার্য বলেন, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফি ছিলেন একজন প্রখ্যাত মৎস্যবিজ্ঞানী এবং নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক ও গবেষক। অত্যন্ত বিনয়ী, সজ্জন ও নিষ্ঠাবান এই অধ্যাপক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। তিনি বিভাগের অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়নে বিপুল অংকের আর্থিক অনুদান প্রদান করে এক মহতী দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন।

“মৎস্যবিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণায় অসাধারণ অবদানের জন্য গুণী এ অধ্যাপক স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”