৭৭ ঘণ্টা পর ঢাবি শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙালেন উপাচার্য

সাতাত্তর ঘণ্টা পর উপাচার্যের আশ্বাসে পান করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারের অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনে ছয় দফা দাবিতে অনশনে বসা শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 April 2022, 03:20 PM
Updated : 11 April 2022, 03:20 PM

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে রনিকে ডাবের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান।

সেখানে উপাচার্যের সঙ্গে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া, ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা সেবাসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে গত শনিবার দুপুরে দেড়টার দিকে সেখান থেকেই ফেইসবুকে অনশনের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বাম পা এবং কোমরে আঘাত পেয়ে গেল ৫ এপ্রিল থেকে এ মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হন রনি।

যথাযথ চিকিৎসা ও সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে সেখানকার ভোগান্তি, অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনা নিয়ে ২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা ফেইসবুকে পোস্ট করেন তিনি।

তাতে ছয়টি দাবি তোলেন রনি।

১. মেডিকেল সেন্টারের এন্ট্রি পয়েন্টে ইনফরমেশন ডেস্ক স্থাপন করতে হবে।

২. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক লিফট, র‍্যাম্প, হুইল চেয়ার ও অন্যান্য সরঞ্জাম দিতে হবে।

৩. ছাত্রীদের অন্তর্বর্তীকালীন শারীরিক সমস্যার সব চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় টিকা দিতে হবে।

৪. অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় আধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী ও ওষুধ প্রদান এবং প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট বা মেশিন স্থাপন করতে হবে।

৫. অতিদ্রুত মেডিকেল সেন্টারে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার প্রদান ও ক্যান্টিন স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে।

৬. অতিদ্রুত হাইকমোড, তথা হাইলি ডেকোরেটেড স্যানিটেশন সিস্টেমে টয়লেট, বাথরুম তৈরি করতে হবে।

সোমবার সন্ধ্যায় মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে তার ৬ দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে উপাচার্য বলেন, “ইতোমধ্যেই কিছু দাবির বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকি দাবিগুলো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। আর আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নতুন একটি ভবন দুই বছরের মধ্যেই নির্মাণ করা হবে।”

তিনি রনিকে ভালো কোনো হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ নেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। তবে সেখানে শিক্ষক-কর্মকর্তারা খুব একটা না গেলেও আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার জন্য যেতে হয়।

মেডিকেল সেন্টারের অব্যবস্থাপনা নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে প্রণীত ‘মাস্টার প্ল্যান’ এ মেডিকেল সেন্টারটি আধুনিকায়নের কথা বলা হয়েছে।