অকৃতকার্যদের ‘প্রমোশনের’ দাবিতে নীলক্ষেত মোড় অবরোধ

বিভিন্ন বর্ষে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পরবর্তী বর্ষে তুলে দেওয়াসহ তিন দাবিতে ঢাকার নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের একদল শিক্ষার্থী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 March 2022, 10:56 AM
Updated : 22 March 2022, 10:56 AM

কয়েকশ শিক্ষার্থী মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে রাখায় আজিমপুর-মিরপুর সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়।

পরে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তার আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছাড়েন বলে নিউ মার্কেট থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) অর্পিত ঠাকুর জানান।

তিনি বলেন, “আগামী ২৯ মার্চ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কর্তৃপক্ষ বসবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।”

আন্দোলনকারীদের একজন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মাসুদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এসে আমাদেরকে আশ্বাস দিয়েছেন যে, কর্তৃপক্ষ বসে একটা সমাধান দেবেন। এই আশ্বাসে আমরা আন্দোলন স্থগিত করছি। ২৯ তারিখে আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাব।"

আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক সরকারি বাংলা কলেজের ২০১৯-২০সেশনের শিক্ষার্থী সাগর নেওয়াজ বলেন, এর আগে গত ১৬ মার্চ যখন তারা আন্দোলনে নেমেছিলেন, তখনও কর্তৃপক্ষ দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছিল।

“তখন আমরা তাদের ৭২ ঘণ্টার সময় দিই। কিন্তু ৯০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আমাদেরকে কোনো সমাধান দেওয়া হয়নি। উল্টো আমরা দেখা করতে গেলে আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন অজুহাতে দেখা দেয়নি। তাই আমরা আবারও সড়ক অবরোধ করেছি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে আমরা আমরণ অনশন করব।”

শিক্ষার্থীদের তিন দাবি হল-

>> কোভিড সংক্রমণের কারণে ২০১৭-১৮, ১৮-১৯, ১৯-২০ সেশনের সকল বিভাগের অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের প্রমোশন দিয়ে পরবর্তী বর্ষে পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে।

>> দর্শন বিভাগের প্রশ্নের মান বণ্টন পরিবর্তন করতে হবে।

>> গণহারে ফেল করার কারণ ও প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং এর স্থায়ী সমাধান করতে হবে।

কবি নজরুল সরকারি কলেজের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া বলেন, “আমাদের ইনকোর্স পরীক্ষা নেওয়া হয়, কিন্তু মূল নম্বরের সঙ্গে এটা যোগ করা হয় না। দর্শন বিভাগের যেসব শিক্ষার্থী আছে, তাদের প্রশ্নের মানবণ্টন পরিবর্তন করতে হবে এবং সাত কলেজে যেভাবে গণহারে ফেল করিয়ে দেওয়া হচ্ছে সেটার সুষ্ঠু ও স্থায়ী পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

“গত বছরগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন কারণে সিজিপিএ শিথিল করা হয়েছে। এবার করোনাভাইরাস মহামারী বিবেচনা করে শেষবারের মতো প্রয়োজনে লিখিত নিয়ে মানবিক বিবেচনায় ভুক্তভোগী প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন দিয়ে ভুক্তভোগীদের পড়ার টেবিলে বসার সুযোগ করে দিতে হবে। তা না হলে, এখানেই আমাদের শিক্ষা জীবনের ইতি টানতে হবে।”

বিষয়টি নিয়ে সরকারি সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।