ঢাবিতে শিক্ষার উন্নয়নে শত কোটি টাকার তহবিল করছে প্রাক্তনরা

শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়িয়ে বৈশ্বিক র‌্যাংকিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়ে শত কোটি টাকার তহবিল গঠন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 March 2022, 05:39 PM
Updated : 10 March 2022, 05:39 PM

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেআজাদ বলেন, “ইতোমধ্যে অ্যালামনাই প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা অনেক দূর এগিয়ে এসেছি। আশা করছি, আগামী দুই-এক বছরের মধ্যে আমরা বাকি ফান্ডটা জোগাড় করে ফেলব।”

বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আগামী ১২ মার্চ প্রাক্তনদের ‘শতবর্ষের মিলনমেলা’ অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

একে আজাদ বলেন, “শতবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে পৌঁছানোর কথা ছিল, সেখানে আসতে পারেনি। আমরা দেখেছি বিশ্বের এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিংয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নেই।

“ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০০ র‍্যাংকিংয়ের ভেতরে আনতে আমাদের সংগঠন কাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চের জন্য যে বাজেট প্রয়োজন, সে পরিমাণ বাজেট সরকার থেকে আসছে না।

“আমরা সেখানে ‌অনুদান দিতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে র‍্যাংকিংয়ে বিশ্বের ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আনতে আমরা ১০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠনের একটি লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি।”

৩০-৪০ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব সুবিধা ছিল, সেগুলো কমে আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আপনারা দেখবেন ৬০ এর দশকের পাঠাগার, মেডিকেল সেন্টার কিন্তু এখনও আছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাড়লেও সেগুলোর ধারণক্ষমতা ও সক্ষমতা বাড়েনি। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী অর্থাভাবে যথাযথভাবে তাদের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারে না।”

তাদের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে একে আজাদ বলেন, “প্রতি বছর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাড়ে তিন কোটি থেকে চার কোটি টাকা বৃত্তি প্রদান করা হয়।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ, মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে মিলনমেলার আয়োজন করছে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।

দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বিশ্বের ২৫টি দেশে অবস্থানরত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ হাজার ৩৩৭ জন সদস্য রেজিস্ট্রেশন করেছে বলে জানান অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার।

“অনুষ্ঠানে আমাদের সংগঠনের আজীবন সদস্যরা পরিবারসহ উপস্থিত থাকবেন। আমরা প্রত্যাশা করছি বিশ্বের ২৫টি দেশের অ্যালামনাই আমাদের অনুষ্ঠানে যুক্ত হবেন। তাদের স্ত্রীসহ মোট রেজিস্ট্রেশন করেছে ১১ হাজার ৩২৭ জন।

“অনুষ্ঠান কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে আমাদের অনেকগুলো প্রকাশনার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আশা করি আগামী ১২ মার্চ আনন্দ-উল্লাসে, শপথে অঙ্গীকারে, আমরা আমাদের মিলনমেলা সম্পন্ন করতে পারব।

১২ মার্চ ‘শতবর্ষের মিলনমেলা’ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে  সাড়ে ৮টা থেকে অ্যালামনাই এবং অতিথিরা প্রবেশ করবেন। সকাল ১০টায় পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠ ও শোক প্রস্তাবের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে।

১০টা ৫০ মিনিটে বেশ কিছু গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ শিল্পীর ১০০ ছবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রপ্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হবে। এরপর অতিথিরা বক্তব্য রাখবেন।

দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ‘বাংলাদেশের পদযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ গুণীজনকে মরনোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হবে। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হবে মিলনমেলা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের একক পরিবেশনা থাকবে।