ঢাবি হলে শিক্ষার্থী 'নির্যাতনে' জড়িতদের শাস্তি দাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় অসুস্থ এক শিক্ষার্থীকে ‘নির্যাতনের’ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Jan 2022, 01:20 PM
Updated : 27 Jan 2022, 01:20 PM

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে 'গেস্টরুম নির্যাতনের’ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে মানববন্ধন করে একদল ছাত্রছাত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে রাতে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের 'গেস্টরুমে' নিয়ে ছাত্রলীগের ‘নির্যাতন’ বন্ধ করার পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তা দাবি করা হয় মানববন্ধন থেকে।

ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় বুধবার রাতে বিজয় একাত্তর হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আকতারুল ইসলামকে বুধবার রাতে ‘শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন’ করে হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে ওই শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ওই অভিযোগ পাওয়ার পর হলের আবাসিক শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম সানাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করার কথা জানিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুল বাছির।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হোসেন বলেন, “আকতার অসুস্থ থাকার পরও তাকে গেস্ট রুমে ডেকে নির্যাতন করা হয়। একজন ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক আশা নিয়ে আসে, কিন্তু এই 'গেস্ট রুম' এর কারণে এই স্বপ্নগুলো ধূলিসাৎ হয়ে যায়। আমরা এই গেস্টরুম কালচার চাই না। এটা চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হোক।"

ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান ইমাম বলেন, “যাদের বাইরে থাকার সামর্থ্য নেই তারাই হলে থাকে। কিন্তু 'গেস্ট রুম' এর নামে হলগুলোতে যে অমানবিক নির্যাতন করা হয়, তা বর্ণনাতীত। এগুলো তারা ভয়ে মুখ বুজে সহ্য করে যায়।

“আকতারুল এর বাবা অসুস্থ ছিলেন। সে নিজেও শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। তারপরও তাকে নির্যাতন করা হল। তাকে যারা নির্যাতন করেছে, প্রত্যেককে শনাক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে।"

শিক্ষার্থীরা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন রাতে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের 'ম্যানার্স' শেখানোর নামে হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে যায়।

মানববন্ধনে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিসা ইসলাম সাকাফি বলেন, “আমরা সবাই আচরণ শিখেই এখানে এসেছি। আমাদের সেটা শিখানোর কী আছে? আমরা চাই এই জঘন্য প্রথা বন্ধ করা হোক, যাতে আমরা শান্তিমত পড়ালেখা করতে পারি। বাবা মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে পারি।"