শাবি শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি, ঢাবিতে শিক্ষক নেটওয়ার্কের 'প্রতীকী অনশন'

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে ঢাকায় 'প্রতীকী অনশনে’ বসেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2022, 08:20 AM
Updated : 24 Jan 2022, 08:57 AM

সোমবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের ব্যানারে অন্তত ১৮ জন শিক্ষক এ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন।

বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর একদল নেতা-কর্মীও শিক্ষকদের এই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মারুফুল ইসলাম জানান, তাদের এই প্রতীকী অনশন বিকাল ৩টা পর্যন্ত চলবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, “আমরা শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত। এই শীতের রাতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত ১১৬ ঘণ্টা অনশন করেছে, কিন্তু তাদের দাবি মানা হয়নি।

“সরকারের পক্ষ থেকে,  বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কালক্ষেপণের যে প্রক্রিয়া, এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের অসহিষ্ণু করে তোলার কৌশল নেওয়া হয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি, সরকার শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি দ্রুত মেনে নিয়ে শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবে।"

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, একই বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা অংশ নিচ্ছেন অনশনে।

এছাড়া উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের কাজী মারুফুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের ফাহিরনা দূর্রাত, ব্যবস্থাপনা বিভাগের তাহনিমা খানম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজলী শেহরীন ইসলাম এবং অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদীও কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা।

এসময় তাদের তিনটি দাবির মধ্যে ছিল- প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ, হলের অব্যবস্থাপনা দূর করে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং দ্রুত ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া।

পরে গত রোববার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।

এরপর ওইদিন বিকালে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েনের প্রতিবাদ করলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় পুলিশ।

ধাওয়া-পাল্টার এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাসহ অন্তত অর্ধশত আহত হন।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও তা উপেক্ষা করে উল্টো উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনের এক পর্যায়ে আর শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে অনশন শুরু করেন, যা সোমবার ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে।