ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় ঢাবির জগন্নাথ হলে শিক্ষার্থীকে 'চড়-থাপ্পড়'

সংগঠনের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে এক ছাত্রকে রুমে গিয়ে ‘চড়-থাপ্পড়’ ও 'অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ' করে সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Dec 2021, 02:53 PM
Updated : 26 Dec 2021, 06:52 PM

রোববার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী সাগর সরকার হল ছাত্রলীগের পদপ্রার্থী সত্যজিৎ দেবনাথের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে হল কর্তৃপক্ষকে লিখিত দিয়েছেন।

তবে শারীরিক আক্রমণের অভিযোগ অস্বীকার করে 'ধমক' দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন সত্যজিৎ।

হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা ঘটনাটা জেনেছি এবং লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টা খতিয়ে দেখে আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেব।"

যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই সত্যজিৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উৎপল বিশ্বাসের সঙ্গে রাজনীতি করতেন।

সামনে হল কমিটিতে সত্যজিৎ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের গ্রুপ থেকে হলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী।

সাগর সরকারের অভিযোগ, রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে সত্যজিৎ তার কয়েকজন সমর্থককে নিয়ে ১০০১১ নম্বর রুমে গিয়ে তাকে শারীরিকভাবে নাজেহাল করেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “২৯ ডিসেম্বর আমার ফাইনাল পরীক্ষা।এজন্য ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে নিয়মিত যেতে পারছি না।

"আজকে দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম, সেই মহূর্তে সত্যজিৎ দেবনাথ তার সমর্থকদের নিয়ে রুমে ঢুকে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। পরে ১০তলা থেকে আমার বিছানা নিচে ফেলে দেন।"

সামনে পরীক্ষা থাকায় এ নিয়ে মানসিকভাবে চাপে থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি। এ ঘটনার পর ১০ তলায় নিজের রুম থেকে নেমে গেলেও সাগর হলে রয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে হল হল ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিৎ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়নি। একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে বা ধমক-টমক দেওয়া হয়েছে। শারীরিক নির্যাতনের কথাটা বাড়িয়ে বলা হচ্ছে।

কেন ধমক দিয়েছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, "ও প্রোগ্রামে ইরেগুলার ছিল, তাই দেওয়া হয়েছে।"

হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উৎপল বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাস্টার্সের একজন ছাত্রের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ দুঃখজনক। বিষয়টা আমাকে একজন ফোন করে জানিয়েছে। হলে না থাকায় বিষয়টা পুরোপুরি জানতে পারিনি।

“হলে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক থাকলেও এখন আর আমরা ওভাবে নিয়ন্ত্রণ করছি না, নামেমাত্র আমরা আছি।  এখন যারা পদপ্রত্যাশী তারাই জুনিয়রদের নিয়ন্ত্রণ করছে, তাদেরকে মিছিল-মিটিংয়ে নিয়ে যায়।”

অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "কর্মসূচিতে না যাওয়ার কারণে কোনো শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তুলবে, এধরনের রাজনীতি ছাত্রলীগ করে না।

“ছাত্রলীগের কোনো প্রার্থী কেন, কোনো কর্মীরও এটা করার সুযোগ নাই। কেউ করে থাকলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।“