ঢাবির হলে বিবাহিত ছাত্রী না থাকার নিয়ম বাতিল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ‘বিবাহিত’ ও ‘অন্তঃসত্ত্বা’ ছাত্রীদের থাকতে না দেওয়ার নিয়ম বাতিল করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2021, 02:47 PM
Updated : 22 Dec 2021, 03:03 PM

শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে বুধবার সন্ধ্যায় প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভা শেষে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবদুল বাছির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হলে থাকা নিয়ে যে নিয়মটা ছিল, ওটা আর থাকবে না। 

“তবে অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সন্তান ও মায়ের স্বাস্থ্য যাতে ঝুঁকিতে না পড়ে, সেজন্য পারিবারিক পরিবেশে থাকাটা বাঞ্চনীয়।"

শিক্ষার্থীদের বাকি দাবির বিষয়ে অধ্যাপক আবদুল বাছির বলেন, “শিক্ষার্থীদের দুটি দাবির বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। যোগাযোগের বিষয়ে লোকাল গার্ডিয়ান এবং কন্টাক্ট পার্সন উভয়ই লেখা থাকবে। কেননা শিক্ষার্থীরা অনেকে অভিভাবকের পরিবর্তে বন্ধুদের ফোন নম্বর দিয়ে দেয়। বেশ কয়েকজন ধরাও পড়েছে।"

এতদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্রীদের ওঠার সময় একটি অঙ্গীকারনামায় সই করতে হয়।

এর একটি ধারায় উল্লেখ আছে, “কোনো ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। অন্যথায় নিয়ম ভঙ্গের কারণে তার সিট বাতিল হবে। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহিত ছাত্রীকে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হবে। অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী হলে থাকতে পারবেন না।“

বিবাহিত হওয়ায় সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল ও সামসুন নাহার হলের দুই শিক্ষার্থীর সিট হল প্রশাসন বাতিল করেছে বলে অভিযোগ ছাত্রীদের।

এরপরই তারা এ নিয়ম বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হয়। হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আবেদন করে আশ্বাস না পেয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে এ নিয়ম বাতিলসহ চার দফা দাবি জানান।

এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেন শামসুন নাহার হল সংসদের সাবেক ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ছাত্রী হলের একটি প্রতিনিধিদল।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ‘বিবাহিত’ ও ‘অন্তঃসত্ত্বা’ ছাত্রীদের থাকতে না পারার নিয়মকে ‘নারীর প্রতি চরম বৈষম্যমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে তা বতিলে উকিল নোটিসও পাঠানো হয়।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ নোটিস পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

এরই মধ্যে প্রভোস্ট কমিটি জরুরি সভা ডেকে সেই নিয়ম বাতিল করেছে।

শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি ছিল-

>> বিবাহিত ছাত্রীদের হলে থাকার যে বিধিনিষেধ এবং তাদের জন্য প্রচলিত যে নিয়ম তা বাতিল করতে হবে।

>> শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মর্যাদা রক্ষার্থে সব ছাত্রী হলে লোকাল গার্ডিয়ান বা স্থানীয় অভিভাবকের পরিবর্তে ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট বা জরুরি যোগাযোগ শব্দটি রাখতে হবে।

>> আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দ্বারা যেকোনও ধরনের হয়রানি এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

>> শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা সাপেক্ষে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অধিকার পুর্নর্বহাল করতে হবে এবং জরুরি প্রয়োজনে তাদেরকে হলে অবস্থান করতে দিতে হবে।