ঢাবি হলে বিবাহিত ছাত্রীর সিট বাতিলের নিয়ম রদে উকিল নোটিস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ‘বিবাহিত’ ও ‘অন্তঃসত্ত্বা’ ছাত্রীদের থাকতে না পারার নিয়মকে ‘নারীর প্রতি চরম বৈষম্যমূলক’ হিসেবে বর্ণনা করে তা বতিলে উকিল নোটিস পাঠানো হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2021, 08:06 AM
Updated : 22 Dec 2021, 08:06 AM

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর এবং তিনটি ছাত্রী হলের (শামসুন নাহার, কুয়েত-মৈত্রী ও সুফিয়া কামাল হল) প্রভোস্টকে বুধবার এ নোটিস পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

ঢাকা বিশ্ববিবিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী এ আইনজীবী রেজিস্ট্রি ডাকে নোটিসটি পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “নারীর প্রতি চরম বৈষম্যমূলক এ বিধান নোটিস পাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে বাতিল না করলে আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব।” 

নেটিসে বলা হয়েছে, শামসুন নাহার হলের আবাসিক ছাত্রীদের সিট বণ্টন সম্পর্কিত ও অন্যান্য শৃঙ্খলামূলক বিধির ১৬ নম্বর বিধিতে অন্তঃসত্ত্বা ও বিবাহিত ছাত্রীদের হলের সিট বতিলের নিয়মের উল্লেখ রয়েছে। এ বিধান নারীর প্রতি ‘চরম বৈষম্যমূলক’।

“এ বিধানের ফলে বিবাহিত শিক্ষার্থীরা আবাসিক সুবিধা নিয়ে উচ্চশিক্ষা পাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ ও চঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এ ধরনের বিধান থাকায় গণমাধ্যম তা গুরুত্বের সাথে সংবাদ, প্রতিবেদন প্রচার-প্রকাশ করছে।

“সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশের সব নাগরিক আইনের চোখে সমান। আর সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য করতে পারে না। সুতরাং এ বিধান সংবিধানের এ দুটি অনুচ্ছেদের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। 

বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে থাকার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন শিক্ষার্থীরাও। তাদের প্রশ্ন, বিবাহিত হওয়া কি অপরাধ? মাতৃত্ব কেন হলে থাকতে প্রতিবন্ধকতা হবে?

গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হলের একদল নারী শিক্ষার্থী। সেখানে চার দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

>> বিবাহিত ছাত্রীদের হলে থাকার যে বিধিনিষেধ এবং তাদের জন্য প্রচলিত যে নিয়ম তা বাতিল করতে হবে।

>> শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মর্যাদা রক্ষার্থে সব ছাত্রী হলে লোকাল গার্ডিয়ান বা স্থানীয় অভিভাবকের পরিবর্তে ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট বা জরুরি যোগাযোগ শব্দটি রাখতে হবে।

>> আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দ্বারা যেকোনও ধরনের হয়রানি এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

>> শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা সাপেক্ষে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অধিকার পুর্নর্বহাল করতে হবে এবং জরুরি প্রয়োজনে তাদেরকে হলে অবস্থান করতে দিতে হবে।

ছাত্রীদের এসব দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবদুল বাছির জানিয়েছেন, কমিটির পরবর্তী মিটিংয়ে বিষয়টি আলোচনার জন্য রাখা হয়েছে।