ভবিষ্যত নির্মাণে ‘বঙ্গবন্ধু পাঠ’ অপরিহার্য: শিক্ষামন্ত্রী

অতীতকে জানার মধ্য দিয়ে নিজেদের ভবিষ্যত নির্মাণের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা বইগুলো পড়া অপরিহার্য বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2021, 07:41 PM
Updated : 11 Dec 2021, 07:41 PM

তিনি বলেন, “দেশকে এগিয়ে নিতে গেলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা, সততা, মানবিকতা, পরমতসহিষ্ণুতা, এসব গুণে সোনার বাংলার সোনার মানুষ হতে বঙ্গবন্ধু পাঠ অপরিহার্য।”

শনিবার বিকালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ‘আমার বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আন্তঃহল বক্তৃতা প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রায় এক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে এ বক্তৃতা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রথম স্থান অর্জন করা ১৮ জনকে নিয়ে শনিবার অনুষ্ঠিত হয় চূড়ান্ত পর্বের প্রতিযোগিতা।

এতে প্রথম হয়েছেন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের শিক্ষার্থী ফাতেমা ফারজানা নির্জনা। হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলের শিক্ষার্থী আবু জার গিফারী জনি দ্বিতীয় এবং শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থী হামিদা নিছা তৃতীয় হন।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর লেখা বইগুলোকে ‘সোনার খনি বা হীরার খনির চেয়েও দামি’ বলে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। এ তিনটি বই হলো- অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন।

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ, তিতীক্ষা ও সংগ্রামের কাহিনীকে যদি আমরা পড়ি, নিজেরা চর্চা করি, তাহলেই আমরা সত্যিকার অর্থে সোনার মানুষ হতে পারব।

“বঙ্গবন্ধুকে জানলে আমরা অতীতকে জানব। অতীতকে না জানলে ভবিষ্যৎ নির্মাণ করা যায় না। অতীতকে জানার জন্য বঙ্গবন্ধু পাঠ সবার জন্য একেবারেই অপরিহার্য।”

এসময় শিক্ষার কাঠামো নিয়ে শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামী শতাব্দীর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা সাজানোর পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

“বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভৌত মাস্টারপ্ল্যান করেছে, আমার হিসাব বলে ভৌত মাস্টারপ্ল্যানের আগে একটা একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান দরকার। সেটির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি ভৌত মাস্টারপ্ল্যান করা উচিত।

“একশ বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয় কী করতে চায়? কোথায় যেতে চায়? তা এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয় সঙ্কটে জাতিকে পথ দেখিয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় আজও পারবে উচ্চশিক্ষায় পথপ্রদর্শক হতে।”

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেন, “জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর একটাই স্বপ্ন ছিল, একটি শোষণহীন সমাজব্যবস্থা। যার জন্য তিনি সারাজীবন কারও সঙ্গে আপোষ করেননি।

“একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, উনি ৪৬ শতাংশ কাটিয়েছেন সাংগঠনিক কাজে, ৪০ শতাংশ কাটিয়েছেন জেলখানায় আর ১৬ শতাংশ সময় কাটিয়েছেন উনার ব্যক্তিগত জীবনে।”

অনুষ্ঠানে অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ সভাপতি মোল্লা মোহাম্মাদ আবু কাওছার, সহ সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী (পারভেজ), মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার, মুজিব শতবর্ষ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও যুগ্ম মহাসচিব সুভাষ সিংহ রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক এ. কে. এম. আফজালুর রহমান বাবু, কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান রাশিদুল হাসান, প্রোগ্রাম সমন্বয়ক কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শামীম রেজা, বাংলাদেশ টেলিভিশনের উপমহাপরিচালক (বার্তা) অনুপ খাস্তগীর ও ডিবিসি নিউজের সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম।

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল খেলার মাঠে আলোচনা সভা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ এবং ‘মুজিব আমার পিতা’ দ্বিমাত্রিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।