খুলছে ঢাবির হল; যেভাবে উঠতে হবে, যেভাবে থাকতে হবে

“আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংযোগ কখন হবে, আমরা সেই অপেক্ষায় আছি,” বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আবদুল বাছির।

রাসেল সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Oct 2021, 07:08 PM
Updated : 5 Oct 2021, 04:37 AM

করোনাভাইরাস মহামারীকালে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর একদিন বাদেই খুলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো। 

মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীরা এলে তাদের বরণের প্রস্তুতিও নেওয়া সারা বলে জানান অধ্যাপক বাছির, যিনি বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন।

“তাদেরকে আনন্দপূর্ণ পরিবেশে বরণ করে নিতে আমাদের হলে আমরা রজনীগন্ধা ফুল, চকলেট, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করছি। অন্যান্য হলের প্রভোস্টদের কাছেও সেই মেসেজটা পাঠানো হয়েছে।”

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোও খালি করে দেওয়া হয়।

দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১৯টি হল ও চারটি হোস্টেলে ২৬ হাজারের মতো শিক্ষার্থী থাকছে, যদিও এগুলোর শিক্ষার্থী ধারণ ক্ষমতা এর প্রায় অর্ধেক।

স্মরণকালের সবচেয়ে দীর্ঘ ছুটিতে সেই শিক্ষার্থীদের যে আবাসন নিয়ে যে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছিল, তার অবসান ঘটতে যাচ্ছে মঙ্গলবার। 

তবে মহামারীর অবসান এখনও না হওয়ায় সব শিক্ষার্থী এথনই হলে উঠতে পারছে না। ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের হলে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যাফেটেরিয়াকে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

হলে লেগেছে রঙ, ঝকঝকে ডাইনিং-ক্যান্টিন

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ঘুরে দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রত্যেক হলের প্রবেশপথে বসানো হয়েছে হাত ধোয়ার বেসিন। হলের দেয়ালে নতুন রঙ, বাগানে নতুন ফুলগাছ ও মাঠের ঘাস কেটে ছোট করা হয়েছে।

দীর্ঘদিনের ধুলোয় মলিন ডাইনিং, ক্যান্টিন, ক্যাফেটেরিয়া, রিডিং রুম ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হয়েছে। টয়লেট ও বাথরুমগুলো পরিষ্কার করার পাশাপাশি কোনো কোনো হলে সংস্কারও করা হয়েছে।

অধ্যাপক আবদুল বাছির বলেন, “হলের সার্বিক পরিবেশ, খাবারের ক্যান্টিন, ডাইনিং, রিডিং রুম, সেলুনসহ সব কিছু আমরা পরিদর্শন করেছি। শিক্ষার্থীদের ব্যবহার্য চেয়ার-টেবিল সবকিছু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে।”

ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যাফেটেরিয়াতে প্রতিদিন খাবারে তালিকাতে কী আছে, তা দেখার জন্য খাবার রাখার জায়গাটা নতুনভাবে বানানো হয়েছে। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহ মো. মাসুম বলেন, “শিক্ষার্থীদের খাবারের সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিতে আমদের হলের ক্যান্টিন ও খাবারের দোকানগুলোকে সংস্কার করা হয়েছে। 

“আগের মতো আর খোলা জায়গায় যেখানে সেখানে খাবার বিক্রির সুযোগ পাবে না কেউ। হলের ভেতর দূরত্ব বজায় রেখে দুটি দোকান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ক্যান্টিনটাকে টাইলস করা হয়েছে, সেখানে খাবার সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য গ্লাস করে বক্স বানানো হয়েছে।”

“আগের চেয়ে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে হলে। আশা করি, দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীরা এই পরিবেশ দেখে খুশি হবে,” বলেন তিনি।

হলগুলোর প্রবেশ পথে হাত ধোয়ার জন্য বসানো হয়েছে এমন বেসিন।

কারা কীভাবে উঠছে

মঙ্গলবার প্রথম ধাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে পারবে।

সকাল ৮টা থেকে হলে উঠতে পারবে শিক্ষার্থীরা, ঢুকতে হলে নিজেদের পরিচয়পত্রের সঙ্গে কোভিড-১৯ টিকার কার্ড সঙ্গে  নিতে হবে, আর অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়া থাকতে হবে।

তাদের পরীক্ষা শেষ হলে নভেম্বরে দ্বিতীয় ধাপে স্নাতক প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাকিয়া পারভীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধির অংশ হিসেবে তাপমাত্রা মেপে, মাস্ক পরিয়ে ও হ্যান্ডস্যানিটাইজ ব্যবহার করিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে ঢোকানো হবে। মহামারীকালে কীভাবে হলে থাকবে, সেজন্য নির্দেশনাবলি টানানো থাকবে।

কোনো শিক্ষার্থীর জ্বর বা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে আইসোলেশনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক জাকিয়া পারভীন।

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার ও শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রকে আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় হলের মধ্যেও আইসোলেশনের ব্যবস্থা রাখছি।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

গণরুম থাকবে না

আবাসন সমস্যার কারণে সৃষ্ট দীর্ঘদিনের ‘গণরুম’ ব্যবস্থা এবার মহামারীতে বিলোপ হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এই প্রথা থাকবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বেশিরভাগ হলেই ‘গণরুমের’ নামে বড় হলরুমে মেঝেতে টানা বিছানা পেতে প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে থাকতে হত।

কারা এসব কক্ষে থাকবে তার নিয়ন্ত্রণ থাকত ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের হাতে। কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি আর কিছু উদ্যোগের পরও এ সমস্যার সমাধান এতদিন হয়নি।

এখন মহামারীর মধ্যে হল খোলার আগে ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে এবং হলগুলোতে যাতে বৈধ শিক্ষার্থীরাই থাকে, তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ১৩টি ছাত্র সংগঠনের নেতাদের নিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর পরিবেশ কমিটির সভা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ছুটির মধ্যে ফজলুল হক হলে চলে নানা সংস্কার কাজ। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

তবে হল খোলার আগেই কয়েকটি হলে একদল শিক্ষার্থী জোর করে হলে উঠে পড়েছেন। সেখানে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও রয়েছে।

মঙ্গলবার হলগুলোতে শুধু স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের উঠানোর কথা থাকলেও সেখানে অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, সে নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৫ অক্টোবর সকাল ৮টা থেকে আমরা শুধু অনার্স ফাইনাল ইয়ার ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের হলে উঠার অনুমতি দিচ্ছি। আমরা বিষয়টি গত দুই মাস ধরে প্রচার করেছি।

“এখন ভিন্ন পরিস্থিতিতে হল খোলা হচ্ছে, বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মাথায় রাখতে হবে। হল প্রশাসন বিষয়গুলো কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ- এমন কেউ হলে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

# যেভাবে থাকতে হবে

মহামারীকালে হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা কীভাবে থাকবে, রিডিং রুম , মসজিদ ও  ক্যান্টিন কীভাবে ব্যবহার করবে, সেসব বিষয়ে একটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসেডিউর) তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি।

হল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের এই এসওপি মেনে চলতে নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

>> সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে নিয়মিত ও সার্বক্ষণিক নিয়মমাফিক নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরতে হবে। টিকা নেওয়ার পরেও সঠিক নিয়মে মাস্ক পরার পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

>> স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পরস্পরের কাছ থেকে কমপক্ষে ১ মিটার (৩ ফুট)  শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

>> জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, সংবেদন হ্রাস, মাংসপেশীতে ব্যথা, মাথা ব্যথা, চোখ গোলাপী হয়ে যাওয়া বা গলা ব্যথাসহ অন্যান্য কোভিড ১৯ লক্ষণ থাকলে বাড়ি বা হলের কক্ষে অবস্থান করতে হবে এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন কেন্দ্রে বা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে কর্তৃপক্ষ।


>> প্রতিটি কাজের আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে ধুতে হবে, হাত না ধুয়ে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা যাবে না। করমর্দন এবং আলিঙ্গন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

>> যেখানে সেখানে কফ-থুথু ফেলা যাবে না, হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় হাতের কনুই-এর ভাঁজে বা টিস্যু দিয়ে মুখ ও নাক ঢাকতে হবে। প্রবেশ ও বহির্গমন পথে ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে এবং দৈহিক তাপমাত্রা পরিমাপ করতে হবে। ক্লাসরুম, পরীক্ষার হল, লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি ও অফিসসমূহে পর্যন্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদ্ধতি ও নিয়ম (এসওপি) অনুসরণ করতে হবে।

>> হঠাৎ কেউ অসুস্থতা বোধ করলে অবিলম্বে মেডিক্যাল সেন্টারে যোগাযোগ করতে হবে।

>> শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ কক্ষ এবং কক্ষের আশপাশ সবসময় নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার রাখতে হবে এবং এক্ষেত্রে হল প্রশাসন সহযোগিতা করবে।

>> হল ডাইনিং, ক্যান্টিন, মেস, দোকান, সেলুন, রিডিংরুম, অডিটোরিয়াম, টিভিরুম, অতিধিকক্ষ, পাঠাগার, মসজিদ ও উপাসনালয়ে ভিড় করা যাবে না। এসব স্থানে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বিধি অনুসরণ এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

ডাইনিংয়ে পালা করে খাবার খেতে হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অতিথিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে। বেড়াতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সভা-সমাবেশ, রেস্তোরাঁ, পার্টি ও গণপরিবহন এড়িয়ে চলতে হবে।

# চিকিৎসা সংক্রান্ত

কোনো আবাসিক শিক্ষার্থীর দীর্ঘস্থায়ী কোনো অসুখ-বিসুখ (যেমন উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ক্যান্সার,
ডায়াবেটিস প্রভৃতি) থাকলে তা আগেই হল প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানাবেন। হলে অবস্থানকালে কোনো শিক্ষার্থী অসুস্থতা বোধ করলে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রের ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন এবং সংশ্লিষ্ট আবাসিক শিক্ষককে অবহিত করবেন।

কোনো শিক্ষার্থীর কোভিড-১৯ উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে হাসপাতাল নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারী ব্যবস্থাপনার জন্য জনস্বাস্থ্য কার্যক্রম যেমন- রোগ সনাক্তের জন্য ক্যাম্পাসে নমুনা সংগ্রহের বুথ স্থাপন, মৃদু লক্ষণ ও লক্ষণবিহীন কোভিড-১৯ রোগীদের আইসোলেশন, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং, কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করতে হবে।

কোভিড-১৯ রোগীদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার জন্য ক্লাসরুম, ল্যাব, হল, ডাইনং রুম প্রভৃতি স্থানে প্রবেশকারীদের তালিকা লিখিত বা ইলেক্ট্রনিক উপায়ে সংরক্ষণ করতে হবে। ১৪ দিনের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট টিউটরিয়াল গ্রুপে/ক্লাসে/হলের ব্লকে কতজন কোভিড-১৯ শনাক্ত হলে তা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে, রোগতত্ত্ববিদদের সাথে পরামর্শ করে তা ঠিক করতে হবে।

# খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা

>> সুষম খাবার খেতে হবে এবং পরিমাণমত পানি পান করতে হবে, অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করতে হবে।

>> নিয়মতান্ত্রিক ও সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করতে সচেষ্ট থাকতে হবে, বেশি রাত পর্যন্ত জেগে থাকা যাবে না, পরিমিত সময় পর্যন্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

>> খেলাধুলায় ও সহশিক্ষা কার্যক্রম যেমন- খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ‘অধিকতর মনোনিবেশ’ করতে হবে; প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করতে হবে, স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে যুক্ত থাকতে হবে।

>> ক্যান্টিন/ক্যাফেটেরিয়ায় একাধিক গেট থাকলে, একটি গেট প্রবেশের জন্য এবং অন্যটি বহির্গমনের জন্য ব্যবহার করতে হবে।

>> ক্যান্টিন/ক্যাফেটেরিয়ায় পালাক্রমে খাবার খেতে হবে। তবে বোতলজাত পানীয় এবং ডিসপোজেবল পাত্রে খাবার সংগ্রহ করে রুমে বসে খাওয়া বেশি নিরাপদ। একই সময়ে কর্মীদের সংখ্যা সীমিত করতে ১০-১৫ মিনিটের ব্যবধানসহ শিফট পরিচালনা করতে হবে।

>> স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে ব্যবহৃত ছুরি-চামচ, খাবারপাত্র, কাপ ইত্যাদি পুনঃব্যবহারের আগে ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ কক্ষ এবং কক্ষের আশপাশ সবসময় নিজ দায়িত্বে পরিষ্কার রাখতে হবে।

>>হল ডাইনিং, ক্যান্টিন, মেস, দোকান, সেলুন, রিডিংরুম, অডিটোরিয়াম, টিভিরুম, অতিথিকক্ষ, পাঠাগার, মসজিদ ও উপাসনালয়ে ভিড় করা যাবে না। এসব স্থানে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বিধি অনুসরণ এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে স্থাপিত অস্থায়ী টিকা কেন্দ্রে সোমবার টিকা নিতে শিক্ষার্থীদের লাইন । ছবি: মাহমুদ জামান অভি

শ্রেণিকক্ষে ক্লাস কবে শুরু?

সংক্রমণের হার কমে আসায় হল খুললেও শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সিদ্ধান্ত এখনও নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সব শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় এলে সরাসরি ক্লাস শুরু করার সিদ্ধান্ত আগে নেওয়া ছিল।

মোট ৩৮ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে বর্তমানে ২৩ হাজার শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসের টিকার আওতায় এসেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান।

তিনি সোমবার বলেন, “এপর্যন্ত আমরা প্রায় ২৩ হাজার শিক্ষার্থীর অন্তত এক ডোজ টিকা গ্রহণের তথ্য পেয়েছি। প্রায় ছয় হাজার শিক্ষার্থী সুরক্ষায় নিবন্ধন করে এখন এসএমএসের জন্য অপেক্ষায় আছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “আমরা একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সভায় এ সম্পর্কে আলোচনা করে একটি রোডম্যাপ দিয়েছি। সব শিক্ষার্থী টিকার আওতায় আসলে শ্রেণিকক্ষের পাঠদান শুরু হবে। এর আগে অনলাইন-অফলাইনে ক্লাস ও পরীক্ষা চলবে।”

মঙ্গলবার সকালে হল খোলার পর বিভিন্ন হল পরিদর্শনে যাবেন বলে জানান তিনি।