ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা: প্রতি আসনের বিপরীতে লড়বেন গড়ে ৪৫ জন

মহামারীর কারণে বার বার পিছিয়ে যাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১ অক্টোবর শুরু হচ্ছে, যেখানে প্রতি আসনের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন গড়ে ৪৫ জন শিক্ষার্থী।

নিজস্ব প্রতিবেদকও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2021, 08:44 AM
Updated : 29 Sept 2021, 08:44 AM

সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যারয়ের পাঁচটি ইউনিটের ৭ হাজার ১৪৮টি আসনের বিপরীতে মোট ৩ লাখ ২৪ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন এবার।

মহামারী পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের কষ্ট কমাতে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের আট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ পরীক্ষার কেন্দ্র থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বুধবার আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

সূচি অনুযায়ী ১ অক্টোবর বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিট, ২ অক্টোবর কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিট, ২২ অক্টোবর ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ‘গ’ ইউনিট এবং ২৩ অক্টোবর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগ পরিবর্তনের সমন্বিত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হবে।

এছাড়া ৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটের ‘সাধারণ জ্ঞান’ পরীক্ষা হবে।

চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে, রাজশাহী বিভাগের শিক্ষার্থীরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, খুলনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে, সিলেট বিভাগের শিক্ষার্থীরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে, রংপুর বিভাগের শিক্ষার্থীরা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, বরিশাল বিভাগের শিক্ষার্থীরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ময়মনসিংহ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা দেবেন।

‘ক’ ইউনিটের ১ হাজার ৮১৫টি আসনের বিপরীতে এবার ভর্তি পরীক্ষার আবেদন করেছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৯৫৭ জন শিক্ষার্থী। ‘খ’ ইউনিটের দুই হাজার ৩৭৮ আসনের বিপরীতে ৪৭ হাজার ৬৩২ জন, ‘গ’ ইউনিটে এক হাজার ২৫০ আসনের বিপরীতে ২৭ হাজার ৩৭৪ জন, ‘ঘ’ ইউনিটে এক হাজার ৫৭০ আসনের বিপরীতে এক লাখ ১৫ হাজার ৮৮১ জন এবং ‘চ’ ইউনিটে ১৩৫ আসনের বিপরীতে ১৫ হাজার ৪৯৬ শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছেন।

এই হিসাবে ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনের জন্য লড়বেন গড়ে ৬৫ জন, ‘খ’ ইউনিটে ২০ জন, ‘গ’ ইউনিটে ২১ জন, ‘ঘ’ ইউনিটে ৭৪ জন এবং ‘চ’ ইউনিটে ১১৫ জন।

উপাচার্য বলেন, "যে কোনো ধরনের জালিয়াতির বিরুদ্ধে সবসময় আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি থাকবে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগ প্রশ্নফাঁসসহ যে কোনো বিষয়ে আমাদের সহায়তা দেবেন।"

এবারের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা ৮ থেকে ৩১ মার্চ অনলাইনে আবেদন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রথমে মে মাসে এই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে দুই মাস পিছিয়ে ৩১  জুলাই থেকে পরীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু মহামারী পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি না হওয়ায় তা আরও পিছিয়ে যায়।

এবার পরীক্ষা পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এতদিন মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হত। সেখানে ১২০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর এবং এসএসসি ও এইচসির জিপিএর ভিত্তিতে ৮০ নম্বরের মধ্যে প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে মেধাতালিকা তৈরি করা হত।

এবার মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএর জন্য থাকছে ২০ নম্বর, বাকি ৮০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। তার মধ্যে আবার ৩০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে।

অন্যদের মধ্যে 'ক' ইউনিটের সমন্বয়ক ও জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, 'খ' ইউটের সমন্বয়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, 'গ' ইউনিটের সমন্বয়ক ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মঈন, 'ঘ' ইউনিটের সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সাদেকা হালিম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।