সলিমুল্লাহ হলের বারান্দায় ফাটল, পর্যবেক্ষণে বিশেষজ্ঞ কমিটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে শিক্ষার্থীদের ‘গণরুম’ হিসেবে ব্যবহৃত দ্বিতীয় তলার বারান্দায় ফাটল দেখা দেওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2021, 04:32 PM
Updated : 23 Sept 2021, 05:20 PM

ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে ইতোমধ্যে সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ।

প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মজিবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন প্রকৌশলী ও বুয়েটের তিনজন বিশেষজ্ঞ কমিটিতে থাকছেন।

কমিটির অন্যতম সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সার্কেল-১) কাজী মো. আকরাম হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ফাটল ধরা জায়গাগুলো পরিদর্শন করেছি। সেখানে শিক্ষার্থীদের খাট, বিছানাপত্র রয়েছে। আপাতত আমরা সেগুলো সরানোর কথা বলেছি।

“যেহেতু এটি একটি ঐতিহ্যবাহী হল, আমরা বিষয়টা আরও পর্যক্ষেণ করে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাব।”

পাশ্চাত্য ও মুঘল স্থাপত্যশৈলীর আদলে ১৯৩১ সালের ১১ অগাস্ট গড়ে উঠে দ্বিতলবিশিষ্ট সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নামে।

শুরুতে ১৭৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে হলের আবাসিক ছাত্র সংখ্যা সাত শতাধিক। আবাসিক-অনাবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮৯১ জন।

শয্যা সঙ্কটের কারণে হলের দ্বিতীয় তলার দক্ষিণ পাশে প্রশস্ত বারান্দায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী সারি সারি বিছানা পেতে কষ্ট করে থাকছিল।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে হল বন্ধ থাকলেও ফাটল দেখা দেওয়ায় আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে বারান্দা থেকে খাট, বিছানাসহ ভারী জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ।

এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বারান্দায় কোনো ছাত্র অবস্থান করতে পারবে না। তাই আগামী অক্টোবরের মধ্যে বারান্দায় রাখা নিজ নিজ বিছানাপত্র ও খাটসমূহ সরিয়ে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের নির্দেশনা দেওয়া হল। অন্যথায়, হল কর্তৃপক্ষ এই সব খাট বা বিছানাপত্র সরিয়ে ফেলবে।”

এভাবে গণরুমে থাকছিল শিক্ষার্থীরা।

বারান্দায় অবস্থানরত ছাত্রদের দ্রুত হল অফিসে যোগাযোগ করে সিটের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেন, “সলিমুল্লাহ মুসলিম হল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের, অনেক আগের হওয়াতে বারান্দাগুলোর লোড নেয়ার ক্ষমতা কমে গেছে। বারান্দার একাধিক জায়গায় বেশ বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। বারান্দার একটি বিম বাঁকা হয়ে গেছে। ছাদে স্থাপিত ভারী পানির ট্যাংকগুলো অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

“বারান্দায় থাকা ভারী আসবাবগুলো সরিয়ে নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। তাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এগুলো সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

“হলে যেসব আসন ফাঁকা হয়েছে, আমরা সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বারান্দায় থাকা শিক্ষার্থীদের  বরাদ্দ দিচ্ছি। বারান্দায় থাকা শিক্ষার্থীদের আমরা হল অফিসে যোগাযোগ করার আহ্বান জানাচ্ছি।”