বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে থেকে ‘প্রতীকী কফিন’ কাঁধে নিয়ে ‘কৃষ্ণচূড়া কৃষ্ণচূড়া, বিপজ্জনক কৃষ্ণচূড়া’ স্লোগানে মিছিল বের করে এই শিক্ষার্থীরা।
মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে কাফন সমেত গাছের গুঁড়িটি রেখে আসে তারা।
এর আগে কেটে ফেলা গাছটির পাশেই আরেকটি গাছের চারা রোপণ করে শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলাভবনের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে থাকা বহু দিনের কৃষ্ণচূড়া গাছ কেটে ফেলে।
কর্তৃপক্ষের দাবি, গাছটির গোড়া ক্ষয়ে হেলে পড়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবরি কালচার সেন্টারের পরিচালকের নেতৃত্বে একটি কমিটি পর্যবেক্ষণ করে গাছটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে সিদ্ধান্ত দেওয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে সেটি কেটে ফেলা হয়েছে।
মহামারীর কারণে বন্ধ ক্যাম্পাসে বহুদিনের স্মৃতিজড়িত গাছটি কেটে ফেলায় শিক্ষার্থীদের অনেকে ফুলে ফুলে লাল হয়ে থাকা গাছটির পুরনো ছবি ফেইসবুকে শেয়ার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেন।
এরই মধ্যে একদল শিক্ষার্থী গাছ কাটার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করে।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার তারা সেখানে নতুন একটি গাছের চারা রোপণ করে এটি সংরক্ষণের দাবি জানায়।
একইসঙ্গে কেটে ফেলা গাছটির পরিবর্তে নতুন করে অন্তত একশ’ গাছ ক্যাম্পাসে রোপণ করার দাবিও জানানো হয়।
তাদের দাবি, কেটে ফেলা গাছটির কাঠ বিক্রি না করে চারুকলা অনুষদের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাজের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হোক।
উপাচার্যের বাসভবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম বলেন, “শিক্ষার্থীরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে যখন অক্সিজেনের অভাব বোধ করছে, তখনই বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগ মুহূর্তে এভাবে গাছ কাটা হচ্ছে। এই গাছগুলো কাটা মানেই ইতিহাসকে কেটে ফেলা। কিন্তু আমরা এই ইতিহাসকে বহন করতে চাই।"
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা মী বলেন, “আমরা চাই এভাবে যেন আর কোনো গাছ হত্যাকাণ্ডের শিকার না হয়।
“প্রশাসন এই গাছের কাঠগুলোকে বিক্রি করতে পারবে না। কাঠগুলো চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতে দেওয়া হোক।”
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবরি কালচার সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক মিহির লাল সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের গাছ কাটার একটি নিলাম কমিটি রয়েছে। সেখানে গাছ বিক্রি করে যা অর্থ পাওয়া যায়, সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা হয়। এখন শিক্ষার্থীরা যে দাবি জানিয়েছে, সেটা আমরা বিবেচনা করব।”