বৃহস্পতিবার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা গঠিত উন্মুক্ত মঞ্চ এবং এডুকেশন একাডেমির ধারাবাহিক আয়োজনের অংশ হিসেবে এই দ্বিতীয় ওয়েবিনার হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জার্মানির বন ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক মারুফ মল্লিক।
জার্মানির শিক্ষা ব্যবস্থার একটি চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, সেখানে পাঁচ স্তরের শিক্ষা কাঠামো বিদ্যমান। বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার আগে বাচ্চাদের প্রি-স্কুলিং শিক্ষা দেওয়া হয়। ছয় বছরের কম বয়সী বাচ্চারাই মূলত প্রি-স্কুলিংয়ের আওতায় থাকে।
প্রবন্ধে বলা হয়, জার্মানিতে প্রি-স্কুলিং থেকে প্রাথমিক শিক্ষা হয়ে সেকেন্ডারি এডুকেশন পর্যন্ত কোনো পাবলিক পরীক্ষা নেই। শিক্ষকরাই ক্লাস অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করেন।
জার্মান সরকার শিক্ষা খাতে জিডিপির ৪ দশমিক ৯ শতাংশ ব্যয় করে। একজন শিক্ষার্থীর প্রাথমিক শিক্ষা থেকে টারশিয়ারি শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার গড়ে খরচ করে ১৩ হাজার ৫২৯ ডলার।
জার্মানিতে প্রাথমিক শিক্ষায় ১২ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ২ জন শিক্ষক এবং সেকেন্ডারিতে ১২ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১ জন শিক্ষক আছেন।
মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যে গবেষণায় নেতৃত্ব দিতে পারে, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ জার্মানি।”
জার্মানির শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা নিয়ে কথা বলেন এবং কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। শতভাগ সাক্ষরতা অর্জনে তিনি গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীকে কাজে লাগানোর কথা বলেন।
বাংলাদেশে শিক্ষায় জিডিপির মাত্র ১.৩ শতাংশ খরচ করা হয় জানিয়ে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “এত
অপ্রতুল বরাদ্দ দিয়ে বিশ্বমানের শিক্ষা ও গবেষণা সম্ভব না।”
অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহ-১১ আসনের সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দীন আহম্মেদ শিক্ষা ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের অর্জন তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে বই উপহার, উপবৃত্তি, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন বর্তমান সরকারের অনন্য উদ্যোগ। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে।”
তিনি করোনাভাইরাস মহামারীকালে অনলাইন শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখায় শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানান।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা শাখার পরিচালক অধ্যাপক এ জেড এম শফিউল আজমও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত বিভিন্ন দপ্তর ও সরকারি কলেজের কর্মকর্তারা ওয়েবিনারে অংশ নেন।
আয়োজকরা জানান, মুজিববর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী, দেশ-বিদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা প্রশাসন ইত্যাদি বিষয়ে আগামী ছয় মাস বিভিন্ন ওয়েবিনার হবে।