করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় ১ জুলাই থেকে সাত দিন সারাদেশে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ ঘোষণা করেছে সরকার।
লকডাউনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশে-পাশের এলাকার ভাসমান মানুষের খাদ্য সংকট দেখে শনিবার রাত থেকে এ কর্মসূচি শুরু করেন সৈকত ও তার বন্ধুরা।
নিজেদের অর্থায়নসহ বন্ধু-বান্ধব ও বড় ভাইদের সহযোগিতায় টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ফটকের সামনে রান্না করে আপাতত দৈনিক আড়াই শ মানুষের একবেলা খাবারের জোগান দিচ্ছেন তারা।
একাজে মানুষের সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত হলে আরও বেশি মানুষের দুবেলা খাবারের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান ছাত্রলীগ নেতা সৈকত।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার কঠোর লকডাউনে পথশিশুসহ ছিন্নমূল ও কর্মহীন ভাসমান সবচেয়ে বেশি অসহায় হয়ে পড়েছে। তাই আষাঢ় মাসের তুমুল ঝড়ো বৃষ্টির মাঝেও চলমান কঠোর লকডাউনে খাদ্য সহায়তা নিয়ে এসব মানুষের পাশে আছি। লকডাউন যতদিন চলবে, আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব।"
যাদের পক্ষে সম্ভব, তাদের এই কর্মতৎপরতায় বিগত সময়ের মতোই সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান সৈকত।
গত বছর লকডাউন ঘোষণার পর টানা ১২১ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ভাসমান মানুষদের রান্না করা খাবার দিয়েছিলেন সৈকত ও তার বন্ধুরা। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যার্তদের পাশেও দাঁড়ান তারা।
এসব মানবিক কাজের জন্য গত বছর ১৯ অগাস্ট বিশ্ব মানবিক দিবস উপলক্ষে তানভীর হাসান সৈকতকে ‘রিয়েল লাইফ হিরো’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘ।
চলতি বছর এপ্রিলে আবারও লকডাউন ঘোষণা করা হলে খাবার বিতরণের পাশাপাশি রাজধানীর মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষকে হাসপাতালে যাতায়াতে বিনামূল্যে পরিবহন সেবা এবং উপার্জনহীন পরিবারের শিশুদের জন্য বিনামূল্যে গুঁড়ো দুধ পৌঁছে দেন তারা।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে গিয়ে অসহায় মানুষের গৃহ মেরামত ও তাদের খাদ্য সহায়তা দেন তারা।
লক্ষ্মীপুরের ছেলে সৈকত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স বিভাগের মাস্টার্সে পড়ছেন। তিনি ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে গত ডাকসু নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।